সোনালি অতীত ফিরে পাওয়ার আশায় কাউখালীর মৃৎশিল্পীরা
- রিয়াদ মাহমুদ সিকদার কাউখালী (পিরোজপুর)
- ০৩ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার সন্ধ্যা নদীর পশ্চিমপাড় সোনাকুর গ্রামের মৃৎশিল্পীরা নানা সমস্যায় পড়ে তাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলছেন। পুঁজির জন্য মহাজনি ঋণের চক্রে জড়িয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন তারা। তারপরও অনেকেই পূর্বপুরুষদের এ ঐতিহ্যকে এখনো লালন করে যাচ্ছেন।
বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা, প্রযুক্তির উন্নয়ন ও নতুন নতুন শিল্পসামগ্রী প্রসারের কারণে এবং প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও অনুকূল বাজারের অভাবে মৃৎশিল্প যেন বিলুপ্তির পথে। তবুও কাউখালীতে মৃৎশিল্পীরা স্বপ্ন দেখেন তাদের সেই সোনালি অতীত ফিরিয়ে আনার।
কাউখালী সন্ধ্যা নদীর তীরে সোনাকুর গ্রাম যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা একটি চির সবুজ স্বর্ণালি ছবি। কাউখালী নদীবন্দর থেকে পশ্চিম দিকে বা লঞ্চঘাটে দাঁড়ালে অথবা চলমান জলযান থেকে নদীর পশ্চিমপাড়ের দিকে তাকালে সোনাকুরের সারিবদ্ধ ছোট ছোট কুটিরের নয়নাভিরাম দৃশ্য চোখে পড়ে। এ গ্রামে প্রায় ৬০-৭০টি পরিবার আছে। গ্রামের লোকসংখ্যা ১০-১১ শ’।
সোনাকুর বৃহত্তর বরিশালের একমাত্র মৃৎশিল্পের গ্রাম। এ গ্রামের অধিকাংশ মানুষই মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত। যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে মাটির জিনিসপত্র সে পুরানো ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছে। ফলে এ পেশায় জড়িত শিল্পীদের জীবনযাপন তেমন উন্নত হতে পারেনি।
বাংলাদেশর বিভিন্ন অঞ্চলের মতো কাউখালীর সোনাকুর গ্রামের মৃৎশিল্পীরা অধিকাংশই পাল সম্প্রদায়ের। কয়েকশত বছর আগে এ শিল্পের সাথে জড়িত হয় এ গ্রামের কুমাররা। সোনাকুরের কয়েকজন জানান, জ্বালানি কাঠ, মাটি, শ্রমিকের মজুরি, রঙ, পোড়ানো, পরিবহনসহ প্রতিটি কাজ করতেই টাকার দরকার হয়। এ পেশার উৎকর্ষতা ধরে রাখার জন্য সরকার যে ঋণ চালু রেখেছে, তার সুফল প্রকৃত পেশাজীবীরা পাচ্ছেন না।
গ্রামগঞ্জে এখন আর মাটির হাড়ি পাতিলের চাহিদাও নেই। কিছু নার্সারি ও মিষ্টান্নের ঘরে মৃৎশিল্পের ব্যবহার আছে। এ ছাড়া, পহেলা বৈশাখ কিংবা শহরে বড় বড় নামিদামি হোটেলে মাঝে মধ্যে মাটির তৈরি প্লেট ও হাড়ির অর্ডার পাওয়া যায়। যে কারণে সোনাকুরের কুমাররা এখনো টিকে আছে। কিন্তু তারা এ শিল্পকে নিয়ে আরো বড় স্বপ্ন দেখতে চান।
অনেক পুরনো শিল্পীরাও পেশা বদল করতে বাধ্য হচ্ছে। অনেকের ঘরবাড়ি সন্ধ্যা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। এরপরও নতুনভাবে বাঁচার তােিগদে স্বপ্ন দেখছেন তারা। এখনো তারা আশা করছেন, তাদের মাটির পাত্রের কদর বাড়বে। আবারো হয়তো তাদের পরিবারে ফিরে আসবে সুখ-শান্তি। সেই সুদিনের অপেক্ষায় তারা এখনো কষ্ট করে যাচ্ছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা