অর্ধশত পরিবারের ভাগ্য বদল
- মামুন হোসেন পিরোজপুর
- ০২ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়নে নারিকেলের ফেলে দেয়া ছোবড়া দিয়ে সুতা তৈরি করে প্রায় অর্ধশত পরিবারের জীবন পাল্টে গেছে। ফেলে দেয়া ছোবড়া যেন এ শিল্পে জড়িত নারী-পুরুষের কাছে সোনার হরিণ। ইতোমধ্যে ওই এলাকা নারিকেলের ছোবড়া গ্রাম নামে পরিচিতি লাভ পেয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের অর্ধশত পরিবারের নারী-পুরুষ পারিবারিকভাবে এ পেশায় জড়িত। ছোবড়া দিয়ে সুতা তৈরি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে পরিবারের অর্থনৈতিক চাকা সচল করছেন এ শিল্পের শ্রমিকরা। প্রতি কেজি সুতা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা। বছরে এ জেলা থেকে লাখ লাখ টাকার সুতা বিক্রি হয়। পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ সুতা রফতানি হচ্ছে।
নারীশ্রমিক লাইলী বেগম জানান, এ কাজ করতে গিয়ে আমাদের হাত প্রতিনিয়ত রক্তাক্ত হচ্ছে। তবুও আমরা কষ্ট করে সুতা তৈরি করছি। কারণ, এ আয় দিয়ে সংসার এবং ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচ চালাই। সরকারসহ ব্যাংকগুলোর একটু সহযোগিতা পেলে আমাদের পেশায় আরো উন্নতি হতো।
কারিগর মোস্তফা জানান, আগে ছোবড়ার আঁশ দিয়ে জাজিম, পাপোস, রশি, সোফা, বেডিং ও চেয়ারের গদিসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি করা হতো। আর ছোবড়া থেকে ফাইবার তৈরির সময় যে গুড়া পাওয়া যেত তা কোনো কাজে লাগত না। কিন্তু এখন কোকো ফাইবার নামে ছোবড়ার আঁশ এবং কোকোডাস্ট নামে ছোবড়ার গুঁড়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়াও ছোবড়া বা আঁশ দিয়ে পাখির বাসাসহ মালচিং ম্যাট, কোকো পোল, বাসকেট, ল্যাম্প শেডসহ প্রায় ২০ ধরনের পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে।
কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়নের ছোবড়া শিল্পের মালিক বৃদ্ধ আব্দুল বারেক জানান, তিনি এ শিল্পে ৫০ বছর ধরে নিয়োজিত এবং তার বাবাও এ কাজ করতেন। এ সুতার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে দেশ-বিদেশে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকাররা সুতা ক্রয় করে বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করছেন।
পিরোজপুরের বিসিকের উপব্যবস্থাপক আলী আজগর নাসির জানান, ছোবড়ার তৈরি সুতোর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে। পিরোজপুরের উন্নয়নে বিসিক কাজ করবে। সরকারি সহযোগিতা পেলে পরিবারগুলোতে আসবে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা, রফতানিতে আসবে আরো বেশি গতি। অর্জিত হবে বৈদেশিক মুদ্রা এমনটাই আশা করেন এর সাথে সংশ্লিষ্টরা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা