১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

দোয়ারাবাজারে বানভাসি মানুষের ত্রাণের জন্য হাহাকার

-

পানিবন্দী গত ১৪ জুন সকাল থেকে। সন্ধ্যায় খাসিয়ামারা নদীর বাঁধ ভেঙে বসতঘর ভেসে গেল। সবকিছু ফেলে আত্মরক্ষায় সাঁতার কেটে রাস্তায় একটু উঁচু জায়গায় উঠে আসি। সন্তানদের নিয়ে কোনোমতে ঠাসাঠাসি করে রাস্তার পাশে মাচা বেঁধে কোনো রকমে বসবাস করছি। কথাগুলো বললেন ক্ষিপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের মুকশেদ আলী।
তিনি আরো জানান, পানিবন্দী অবস্থায় বাড়িতে থাকার সময় থেকে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত তাদের পরিবার এক প্রকার অভুক্তই ছিল। ঈদের দিন থেকে শুকনো খাবার, পরে রান্না করা খাবার পেয়েছেন। তার সাথে বসতঘর হারিয়ে রাস্তার পাশে মাচা বেঁধে বসবাস করছেন আরো ১২টি পরিবার।
বন্যায় বসতঘর হারিয়ে রাস্তার পাশে ঝুপড়ি বেঁধে বসবাস করা বন্যাদুর্গতরা জানান, যারা বাড়িতে রয়েছেন তারা অনাহারে-অর্ধাহারে বসবাস করছেন। কয়েকটি গ্রামের অবস্থা আরো করুণ। চলাচলের রাস্তা ভেঙে গেছে, যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম নৌকা। ত্রাণ পৌঁছাতে হলে অনেক ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। এ কারণে কেউ ত্রাণ নিয়ে আসছে না। ফলে আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠা লোকজনের মধ্যে খাবার নিয়ে স্বস্তি থাকলেও যারা নিজের বসতবাড়ি এখনো ছেড়ে আসেননি তারা পড়েছেন নানা সঙ্কটে।
উপজেলা চেয়ারম্যান দেয়ান আল তানভীর আশরাফী জানান, আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার দিচ্ছি। আর বাড়ি বাড়ি যারা আছেন তাদের জন্য যতটুকু সম্ভব ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সরেজমিন শনিবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা সদরের লামাসানিয়া, পর্মশরিফপুর, মাছিমপুর, দোহালিয়া ইউনিয়ন, পান্ডারগাঁও ইউনিয়ন, মান্নারগাঁও ইউনিয়ন ও নরসিংপুর ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকায় মানুষ এখনো পানিবন্দী। জনগুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি চলাচলের সড়ক ভেঙে যাওয়ায় পথচারীরা ঝুঁঁকি নিয়ে নৌকা অথবা পানি ভেঙে চলাচল করছেন।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, পাহাড়ি ঢল না এলে বড় বন্যার আশঙ্কা আর নেই। তখন নদ-নদীতে স্বাভাবিক পানি থাকবে।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নেহের নিগার তনু জানান, শনিবার থেকে জিআর-এর চাল বিতরণ করা হচ্ছে। ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে প্রতিটি ইউনিয়নের বন্যাদুর্গতের মধ্যে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে চাল।


আরো সংবাদ



premium cement