বগুড়ার শেরপুরে নদীভাঙনে ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি বিলীন
- শেরপুর (বগুড়া) সংবাদদাতা
- ২৪ জুন ২০২৪, ০০:০৫
- ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আরো বেশি ক্ষতির আশঙ্কা
পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে বগুড়া শেরপুর উপজেলার করতোয়া নদীর সাতটি পয়েন্টে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে করে ফসলি জমি, বসতবাড়ি, গাছপালা ও ভিটা জমি ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আরো বেশি ক্ষতির আশঙ্কা করছে। শেষ সম্বল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণে সরকারি সহযোগিতা চেয়েছেন ভাঙনকবলিতরা।
সরেজমিনে কথা হয় নদীতে ভেঙে যাওয়া জামিল উদ্দিনের সাথে। তিনি জানান, নদী তীরের একখণ্ড জমি থেকে সারা মাসের খাবারের জোগার আসে তার পরিবারের। সর্বনাশা ভাঙনে শেষ সম্বল হারানোর আতঙ্ক তার চোখে মুখে। শুধু তার নয় জমি ভিটামাটি হারানোর তালিকায় মির্জাপুর ইউনিয়নের কাশিয়াবালা, কবরস্থান ও খানপুর ইউনিয়নের কয়ের খালি, খানপুর দক্ষিণ পাড়া এবং সুঘাট ইউনিয়নের বিনোদপুর উত্তর পাড়া, মাওনা, বিনোদপুর পূর্ব পাড়া করতোয়া নদী পাড়ের মানুষগুলো। ফলে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে গাছপালা বসতবাড়ি ও আবাদি ফসলি জমি। তীব্র ভাঙনে দিশাহারা হয়ে পড়েছে কৃষক ও নদীপাড়ের মানুষগুলো।
বসতবাড়ী নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়া আব্দুল মোমিন জানান, নদীর পাড়ে কয়েক শতক জমি, এই জমিতে বাড়ি করে আছি এটাই আমার একমাত্র সম্বল। সেই জমিটি ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে আমি থাকব কোথায় বা আমার পরিবার নিয়ে কোথায় উঠবো।
বসতবাড়ী নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়া বেলাল হোসেন জানান, বাড়ি ভেঙে নদীর মধ্যে চলে যাচ্ছে। গাছ, বাঁশ ও বস্তা দিয়েও ভাঙন রক্ষা করার চেষ্টা করেছি। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। এখন অন্যের জায়গায় হয়তো আশ্রয় নিতে হবে।
জামিল উদ্দিন বলেন, আমার শুধু দুই বিঘা জমি। এর মধ্যে প্রায় দেড় বিঘা এবার নদীভাঙনে নদীর মধ্যে চলে গেছে। এই জমিতে চাষ করেই আমার সংসার চলতো। এখন আমি দিশাহারা হয়ে পড়েছি। হাফ বিঘাও যদি নদীতে চলে যায়, পথের ফকির হওয়া ছাড়া আমার আর কোনো উপায় নেই।
চান মিয়া জানান, আমার বাড়ির পাশে ভিটা জমি। সেগুলো নদীতে পানি বৃদ্ধি হওয়ার সাথে সাথে ব্যাপক ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে গাছপালাসহ আমার ভিটামাটি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
তোফায়েল আহম্মেদ জানান, আমার বয়সে করতোয়া নদী এত ভাঙতে দেখিনি। এবার নদীটি ব্যাপক আগ্রাসী হয়েছে। এতে আমার দুই বিঘা আখ, এক বিঘা পাট, ঘাস ও সবজির চাষ করেছিলাম, সব নদীভাঙনে ভেসে গেল। আমি ব্যাপক ক্ষতির মধ্যে পড়লাম।
কামাল হোসেন জানান, প্রায় ৩০ বছরের মধ্যে এমন ভাঙন দেখিনি। এবার ভাঙনে বাপ-দাদার ভিটাসহ প্রায় এক লাখ টাকার দামি দামি গাছ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
ভাঙন রোধে সমন্বিত উদ্যোগের আশ^াস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন জিহাদী। তিনি বলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। দ্রুত তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ মজিবর রহমান মজনু বলেন, ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা ও ভাঙন রোধে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা