১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
কারেন্ট জালের অবাধ ব্যবহার

হোসেনপুরে দেশীয় প্রজাতির সুস্বাদু মাছের আকাল

-


কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে স্থানীয় মৎস্য বিভাগের নিয়মিত অভিযানের অভাবে কতিপয় অসাধু মৎস্য শিকারি অবৈধ চায়না দুয়ারী ও কারেন্ট জাল অবাধে ব্যবহার করছে। এ ছাড়া খাল-বিলে অপরিকল্পিত ফিসারি নির্মাণ, ফসলি জমিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার, পুকুর ও জলাশয় ভরাট করে অপরিকল্পিত আবাসস্থল নির্মাণ, খামারে অন্যান্য মাছের সাথে বিদেশী প্রজাতির রাক্ষুসে মাছের চাষসহ নানা কারণে হোসেনপুর উপজেলার সর্বত্র দেশী প্রজাতির সুস্বাদু মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করে জরুরি প্রতিকার দাবি করেছেন।
প্রকৃতিতে এখন চলছে বর্ষাকাল। আর বর্ষা মানেই পানিতে চারদিক থৈ থৈ। খাল-বিলে বর্ষার নতুন পানিতে দেখা মেলার কথা দেশীয় প্রজাতির নানা জাতের সুস্বাদু মাছ। কিন্তু বর্তমানে কোথাও এসব দেশীয় জাতের মাছ খুব একটা বেশি পাওয়া যাচ্ছে না।

সূত্রমতে, একদশক আগেও হোসেনপুর উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় দুই শতাধিক প্রজাতির মিঠাপানির মাছ ছিল। কিন্তু মনুষ্যসৃষ্ট বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতায় এসব মাছের মধ্যে অনেক প্রজাতি এখন আর চোখে পড়ে না। বর্ষা মৌসুমে নদী, খাল-বিল থেকে কারেন্ট জাল দিয়ে ব্যাপকহারে ডিমওয়ালা মাছ ধরার কারণে দেশী ও মিঠা পানির মাছের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সরেজমিনে তথ্যসংগ্রহকালে উপজেলার জামাইল গ্রামের সৌখিন মৎস্যশিকারি নবী হোসেন, জুয়েল মেম্বার, সাইফুল ইসলামসহ অনেকেই জানান, ছোট বেলায় বর্ষা মৌসুমে বাড়ির পাশের নিচু জলাশয় ও নরসুন্দা নদ থেকে বরশি, টাকি জাল ও মাছ ধরার ছাই দিয়ে কত রকমের দেশীয় জাতের ধরেছি, এখন সবই স্মৃতি। সব জায়গাতেই দেশীয় প্রজাতির সুস্বাদু ওইসব মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। তাই দেশীয় জাতের মাছের বংশবিস্তার বাড়াতে উপজেলা মৎস্য বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

স্থানীয় মৎস্যজীবী লীগ নেতা মুসলেহ উদ্দিন মুসলিম জানান, গত এক যুগ আগেও মাছ ধরার চাই ব্যবহার করে ২-৩ ঘণ্টায় যে পরিমাণ দেশীয় জাতের সুস্বাদু মাছ পাওয়া যেতো তা দিয়ে দুইবার তরকারি খাওয়া যেতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে খাল-বিলে মাছই নেই। কারেন্ট জাল ও চায়না জালে সব মাছ ধরা পড়ে যায়। ফলে মাছের বংশ বৃদ্ধিই হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সারোয়ার হোসেন জানান, এ উপজেলায় গভীর খাল-বিলের সংখ্যা কম। এ ছাড়া শুকনো মৌসুমে এগুলোতে পানি না থাকা দেশী প্রজাতির মাছ কমে যাওয়ার একটি বড় কারণ। অভিযানের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চায়না দুয়ারী ও কারেন্ট জালের ব্যাপারে বহুবার অভিযান পরিচালনা করে এগুলো পুড়িয়ে ফেলা হলেও অসাধু মৎস্য শিকারিরা রাতের বেলায় চুপিসারে জলাশয় থেকে মাছ শিকার করে থাকে।

 


আরো সংবাদ



premium cement