চাঁদপুরে নিষিদ্ধ চায়না জালে মাছ নিধনের মহোৎসব
ফরিদগঞ্জের বিভিন্ন হাট বাজারে ধুমছে বিক্রি হচ্ছে এই চায়না ম্যাজিক জাল- ইলিয়াছ পাটওয়ারী চাঁদপুর
- ১১ জুন ২০২৪, ০০:০০
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে চায়না ম্যাজিক জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকারের মহোৎসব চলছে। এতে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, ডিমওয়ালা মাছসহ জলজ প্রাণী ধরা পড়ছে এ জালে। ফলে ক্রমেই মাছশূন্য হয়ে পড়ছে নদী, খাল-বিল ও জলাশয়।
অচিরেই এসব জাল ব্যবহার বন্ধ না হলে দেশের মৎস্যভাণ্ডারে বিপর্যয় নেমে আসার শঙ্কা সাধারণ মানুষের। মাছ শিকারিদের কর্মতৎপরতা রূপ দিয়েছে মাছনিধনে মহোৎসবের। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃশ্যমান নজরদারি না থাকায় দিন দিন বেড়েই চলছে মাছনিধন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে জানা গেছে, সাধারণত এক থেকে দেড় ফুট উচ্চতা ও ৫০ থেকে ৭০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ক্ষুদ্র ফাঁসবিশিষ্ট ধনুুক আকৃতির হয়ে থাকে এই চায়না জাল। রডের রিং দিয়ে খোপ আকারে বাক্স তৈরি করে চার পাশ সূক্ষ্ম জাল দিয়ে ঘেরাও করে তৈরি করা হয়। ফলে দু’দিক থেকেই মাছ ঢুকতে পারে। একটি চায়না জালের দাম আকার ও মান ভেদে দুই থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ফরিদগঞ্জের বিভিন্ন হাট-বাজারে ধুমছে বিক্রি হচ্ছে এই চায়না ম্যাজিক জাল।
এই জালে খুব সহজেই ধরা দেয় কই, পুঁটি, শিং, ট্যাংরা, শোল, টাকি, খইলশা, বাইম, তেলাপিয়া, মাগুর, ছোট-বড় চিংড়ি, পাঙাশ, রুই, কাতল ও আইড় মাছের পোনা, কই, পাবদা, ঢেলা ও বাইলাসহ দেশীয় মাছ। এমনকি ব্যাঙ, সাপ, কচ্ছপ, শামুকসহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণীও মারা পড়ছে এই জালে। ফলে হুমকিতে পড়েছে এসব জলজ প্রাণীও।
উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের বেহারিপুর, বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের চররনবলিয়া, সরখাল, মূলপাড়া, সুবিদপুর পূর্ব ফনিসাইর, বাশারা, উভারামপুর, সুবিদপুর পশ্চিম কামতা, উটতলী, নূরপুর, বদরপুর, বাছপাড়, গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের শ্রী কালিয়া, গুপ্টি, সদরের কাছিয়াড়া বেইলি ব্রিজ এলাকা, বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ এলাকা, পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের গাজীপুর, চরদুঃখিয়া পূর্ব সন্তোষপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতিয়া নদী ও শাখা, উপ শাখা এবং খাল-বিলে অবাধে চলছে চায়না জাল দিয়ে মাছনিধন।
বদরপুর এলাকার জেলে আরিফ জানান, রিং জাল নিষিদ্ধ কি না জানি না, তবে এই জালে পোনাসহ ছোট-বড় সবধরনের মাছ ধরা পড়ে। তাই তিনি ২৭ হাজার টাকায় তিনটি জাল ক্রয় করেছেন।
বাশারা এলাকার সুবাস চন্দ্র জানান, যেভাবে রিং জাল দিয়ে মাছ ধরা হয়, মনে হচ্ছে ডাকাতিয়া নদী থেকে মাছ ধরার মহোৎসব হচ্ছে।
গুপ্টি এলাকার জেলে বিমল চন্দ্র বলেন, তিনি গত ৩৫ বছর ধরে মাছ শিকার করছেন; কিন্ত এ বছরের মতো মাছের সঙ্কট আগে কখনো দেখেননি।
সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ যদি এ বিষয়ে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তবে আগামী প্রজন্মের কাছে দেশীয় প্রজাতির মাছের নাম ইতিহাস হয়ে যাবে। বিভিন্ন বাজারে এ জালগুলো কিনতে পাওয়া যায়, জাল ক্রেতা-বিক্রেতাদের আইনের আওতায় নিয়ে এলে কিছুটা হলেও মাছগুলো রক্ষা পাবে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত হয়েছি, ইতোমধ্যে মাছ শিকারিদের বিভিন্ন স্থান চিহ্নিত করা হচ্ছে। অচিরেই আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা