চলনবিলে বোরো ফলনে স্বস্তির হাসি শ্রমিক সঙ্কটে ম্লান
- মো: নূরুল ইসলাম চাটমোহর (পাবনা)
- ১০ জুন ২০২৪, ০০:১৭
চলনবিলসহ পাবনার চাটমোহরে পুরোদমে চলছে বোরো ধান কাটার কাজ। ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় এবং নির্বিঘেœ ফসল ঘরে তুলতে পারায় বোরো চাষিদের চোখে মুখে ফুটে উঠেছে স্বস্তির হাসি। তবে, ধানকাটা শ্রমিক সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করায় পাকা ধান ঘরে তুলতে বিলম্ব হচ্ছে। অন্য দিকে শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়ছে কৃষকের উৎপাদন খরচ।
চাটমোহর কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিল ৯ হাজার ৬০০ হেক্টর জামিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫০ হেক্টর বেশি জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। চাটমোহরে সাধারণত হাইব্রিড এসএল ৮, হীরা, সুরভী ওয়ান, উফশী ব্রিধান ২৮, ব্রিধান ২৯, ব্রিধান ৫৮, ব্রিধান ৮১, ব্রিধান ৮৪, ব্রিধান ৯২, ব্রিধান ৯৬ ও ব্রিধান ১০০ জাতের ধান চাষ হয়ে থাকে।
উপজেলার নিমাইচড়া গ্রামের কৃষক রুহুল আমীন পলাশ জানান, প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন তিনি। এ ছাড়া তাদের তিনটি অগভীর সেচযন্ত্রের অধীনে প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে বোরোর আবাদ করেছেন অন্য কৃষকরা। বিঘাপ্রতি ২০ থেকে ২২ মণ হারে ধানের ফলন পাচ্ছেন তারা। এ ছাড়াও দুই-তিন হাজার টাকার খড় পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমান বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ১২০ টাকায়। কৃষক বিঘাপ্রতি ১০ হাজারের মতো লাভ পাচ্ছেন। তবে যেসব চাষি অন্যের জমি বার্ষিক ইজারা নিয়ে ধান চাষ করেন তারা লাভবান হচ্ছেন কম।
উপজেলার ধানকুনিয়া গ্রামের কৃষক মোন্নাফ হোসেন জানান, জমি চাষ করা, মই দেয়া, সার প্রয়োগ, চারা রোপণ, জমির আগাছা উৎপাটন, কীটনাশক প্রয়োগ, ধান কাটা, বাড়িতে পরিবহন করা, মাড়াই করাসহ সবমিলিয়ে এক বিঘা জমিতে বোরো চাষ করতে প্রায় ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা খরচ হয়। বিঘাপ্রতি ২৪ থেকে ২৬ মণ ধান পাওয়া যায়। সেচ খরচ বাবদ সেচযন্ত্রের মালিককে দিতে হয় পাঁচ ভাগের এক ভাগ ধান। এসব খরচ বাদ দিলে বিঘাপ্রতি ১০ হাজার টাকার মতো থাকে একজন কৃষকের।
নিমাইচড়া গ্রামের অপর কৃষক জিল্লুর রহমান জানান, তিনি এবার ২৫ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছেন। কৃষি উপকরণের দাম বেড়েছে। ধানের দামও বেড়েছে। নিজেদের এবং গবাদিপশুর খাদ্যের চাহিদা মেটাতে কৃষক বোরো ধান চাষ করেন। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে পাকা ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। এক বিঘা জমির ধান কাটতে শ্রমিক খরচ পড়ছে প্রায় ছয় হাজার টাকা। শ্রমিক সঙ্কটের কারণে অনেকের পাকা ধান জমিতেই পড়ে আছে। কেটে ঘরে তুলতে পারছেন না।
চলনবিল এলাকার কোলা গ্রামের এক শ্রমিক জানান, একজন শ্রমিকের প্রতিদিনের পারিশ্রমিক ৮০০ টাকা। চুক্তিভিত্তিক এক বিঘা জমির ধান কাটতে শ্রমিক নিচ্ছেন ছয় থেকে সাত হাজার টাকা।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ মাসুম বিল্লাহ জানান, এখন পর্যন্ত ৫৮ শতাংশ জমির বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে। হেক্টর-প্রতি গড় ফলন পাওয়া যাচ্ছে ছয় দশমিক পাঁচ মেট্রিক টন। ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকও লাভবান হচ্ছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা