স্কুলে না গিয়েও ৯ বছর বেতন উত্তোলন
- এম আইউব যশোর অফিস
- ১০ জুন ২০২৪, ০০:১৬
লতিকা রানী। চাকরি করেন যশোর সদর উপজেলার চান্দুটিয়া আরিজপুর গোবিন্দপুর মটবাড়ি-সিএজিএম হাইস্কুলে। ৯ বছর বিদ্যালয়ে আসেন না তিনি। স্কুলে না এলেও কী হবে, বেতন তোলার সময় তার স্বামী পঙ্কজ কুমার ঠিকই হাজির হয়ে যান। পেশিশক্তির জোরে স্ত্রীর পরিবর্তে বেতন বিলে স্বাক্ষর করেন তিনি নিজেই। এরপর ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেন। এভাবে বেতন তুলছেন লতিকা রানী।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে লতিকা রানী ২০১৪ সালে তিনি স্কুলে নিয়মিত যাচ্ছিলেন না। তখন মানবিক কারণে তাকে ছাড় দেন স্কুলের শিক্ষকসহ তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটি। পরে ২০১৫ সাল থেকে তিনি একেবারেই স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন। সেই থেকে এ পর্যন্ত তিনি আর স্কুলেই যাননি। অথচ বিগত ১০৫ মাস স্কুলে অনুপস্থিত থেকে তিনি বেতন উত্তোলন করেছেন ২২ লাখ ৯০ হাজার ২৪৮ টাকা ২০ পয়সা।
লতিকা রানীর পরিবার রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী। দীর্ঘদিন ধরে ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিতে যারা সভাপতি হয়েছেন তারা প্রত্যেকেই লতিকা রানীর স্বামীর রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত। এ কারণে লতিকা রানীর স্বামী পঙ্কজ কুমার প্রতিবার কমিটির সভাপতিকে ‘ম্যানেজ’ করে বছরের পর বছর বেতন তুলে নিচ্ছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এমপিও কমিটির সুপারিশে মহাপরিচালকের পক্ষে মাধ্যমিক-২ শাখার শিক্ষা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি পত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কাছে আসে। ওইপত্রে শিক্ষক লতিকা রানীকে চাকরি থেকে অব্যাহতির নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর মাউশির ওইপত্র পেয়ে বিগত ম্যানেজিং কমিটি গত ২৯ জানুয়ারিতে এক সভায় সিদ্ধান্ত হয় সরকারি বিধি অনুযায়ী লতিকা রানীকে অব্যাহতি দেয়ার। একইসাথে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে তার বেতন বন্ধ করেন বিগত কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান।
কিন্তু পরে অধ্যাপক মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস একতরফাভাবে সভাপতি নির্বাচিত হয়ে বিগত কমিটির সিদ্ধান্ত বাতিল এবং সরকারি দফতরের নির্দেশ উপেক্ষা করে লতিকা রানীকে অব্যাহতি না দিয়ে বেতন চালু করেন। এমনকি বেতন বিলে লতিকা রানীর নাম না থাকলে তিনি সেই বিলে স্বাক্ষর করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন অধ্যাপক মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন, এলাকার কিছু লোক চাপ সৃষ্টি করে বিধি বহির্ভূতভাবে বেতন তুলে নিচ্ছেন। যার দায়ভাব আমার আর সভাপতির ঘাড়ে এসেই পড়ছে। আমি অনেক চেষ্টা করেও তাকে অব্যাহতি এবং বেতন বন্ধ করতে পারিনি। এ বিষয়ে সভাপতি অধ্যাপক মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি শুধু বলেন, দেখি কী করা যায়। প্রয়োজনে আমি পদত্যাগ করব। সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রবিউল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে কেউ এভাবে বেতন নিতে পারে না। আমি খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা