১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

নারায়ণগঞ্জে প্রান্তিক চাষিদের কোটি টাকার সবজি নষ্ট

ভারী বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত একটি সবজিক্ষেত : নয়া দিগন্ত -

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ভারী বর্ষণ হওয়ায় নারায়ণগঞ্জে সাড়ে ৩৫ হেক্টর জমির সবজি নষ্ট গেছে। এতে স্থানীয় প্রান্তিক চাষিদের প্রায় দেড় কোটি টাকার সবজি নষ্ট হয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া সাড়ে পাঁচ হেক্টর জমির আউশের বীজতলাও নষ্ট হয়েছে।
তবে ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানার আগেই চাষিরা বোরো ধান ও সোনারগাঁওয়ের কদমী লিচু সংগ্রহ করে ফেলায় তারা বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মুহাম্মদ শাহ আলম এ তথ্য জানান।
শাহ আলম জানান, এ জেলায় ছয় হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়। এবার ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব তথা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ৮১১ হেক্টর জমির সবজি আক্রান্ত হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৩৫ দশমিক ৫ হেক্টর জমির ৬৬৮ মেট্রিক টন সবজি। যার বাজার মূল্য এক কোটি ৬৭ লাখ ১৮ হাজার টাকা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সূত্রমতে, নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি উপজেলায় বছরে সবজির চাহিদার পরিমাণ দুই লাখ ৮৪ হাজার ৭০০ মেট্টিক টন। উৎপাদন হয় তিন লাখ ৩৯ হাজার ৫৭৭ মেট্রিক টন। এর মধ্যে দুই লাখ ১৪ হাজার ৫৬৩ মেট্রিক টন শীতকালীন সবজি ও এক লাখ ২৫ হাজার ১৪ মেট্রিক টন গ্রীষ্মকালীন সবজি উৎপাদন হয়।

নারায়ণগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে সদরের দু’টি ইউনিয়ন, বন্দরের অল্পকিছু অংশ, সোনারগাঁও, রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজারে বেশি সবজি চাষ হয়। ঘূর্ণিঝড়ের ধমকা হাওয়ায় পূর্বাঞ্চলের গ্রীষ্মকালীন সবজির মাচা পড়ে গেছে। এতে করে লাউ, কুমড়া, চিচিঙ্গা, চালকুমড়া, ঢেড়স ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে।
গন্ধবপুর ইউনিয়নের কৃষাণী রোকেয়া বেগম বলেন, আমার দুই একর জমির সবজি নষ্ট হয়েছে। এলাকার সবার সবজির ঝাকা পড়ে গেছে। ৩০০ ফুট এলাকার চাষি মোতাহার আলী জানান, আমার সবজির মাঁচা ভেঙ পড়ে গেছে। ঢেড়স ক্ষেতটিরও ক্ষতি হয়েছে। তবে আমি ও এলাকার লোকজন মিলে পড়ে যাওয়া সবজিগুলো সংগ্রহ করে কমদামে বিক্রি করে দিয়েছি। এতে করে এ বছর আমার লাভ হবে না। তবে লোকসান ঠেকিয়েছি।
আড়াইহাজার উপজেলার পাঁচগাঁও, বিনাইরচর, রসুলপুর ও আশপাশের গ্রামের সবজি চাষিরা বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে আমাদের অর্ধেক সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। আউশের বীজতলা তলিয়ে গেছে। ক্ষেতে সবজির মাঁচা পড়ে গেছে। আমরা হাল ছাড়িনি। পড়ে যাওয়া সবজি সংগ্রহ করে বিক্রি করে দিয়েছি।
এ দিকে সদর উপজেলার বক্তাবলী ও আলীরটেক ইউনিয়নের কৃষকরা জানায়, ঢেড়স, ডাঁটা, চালকুমড়া, চিচিঙ্গা ও মিষ্টি কুমড়া নষ্ট হয়েছে তাদের। কিছু কিছু এলাকায় পানি জমে গিয়েছিল। সদর উপজেলার জালকুড়ি এলাকার কয়েকজন ক্ষুদ্র সবজি চাষি বলেন, আমরাতো এমনিতেই অল্প চাষাবাদ করি। ঘূর্ণিঝড়ে সেসব ফলসও নষ্ট হয়ে গেছে। সবজি ক্ষেতের মাঁচা ভেঙে যাওয়ায় তেমন সমস্যা হয়নি। সমস্যা হয়েছে ডিএনডি এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায়। এতে সবজি ক্ষেতগুলো সব তলিয়ে গেছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement