১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

গোয়ালন্দে লোকবল সঙ্কটে হাতুড়ে পশু চিকিৎসকদের দৌরাত্ম্য

-

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে ডাক্তারসহ লোকবল সঙ্কটের অজুহাতে হাতুরে চিকিৎসকদের দৌরাত্ম্য বেড়ে গেছে। এতে দিশেহারা কোরবানির পশু পালনসহ অন্য খামারিরাও। পশু চিকিৎসার নামে হাতুড়েরা হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে।
জানা যায়, গোয়ালন্দ উপজেলায় শত শত পোলট্রি ফার্ম ও পশু খামার রয়েছে। এসব খামারে লাখ লাখ হাঁস, মুরগি ও কোরবানির পশুসহ অন্যান্য গবাদিপশু রয়েছে। বিশেষ করে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রায় পাঁচ হাজার অতিরিক্ত গবাদিপশু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে এই খামারগুলোতে। কিন্তু সেই তুলনায় এ উপজেলায় সরকারি বা বেসরকারি পশু চিকিৎসক নেই। এতে করে দৌরাত্ম্য বেড়েছে হাতুড়ে ডাক্তারদের।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণিসম্পদ সরকারি হাসপাতালে ১১ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলে এখানে কর্মকর্তা ও চিকিৎসক আছেন মাত্র চারজন। তারা হলেন- উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এবং দুইজন ডাক্তার ও একজন সহকারী।
উপজেলায় পর্যাপ্ত পশু চিকিৎসক না থাকায় ভুয়া ডাক্তাররা গ্রামে গ্রামে ঘুরে খামারিদের পশুর চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা দিয়ে আসছেন। বিনিময়ে কামিয়ে নিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা। ওই সব হাতুড়েদের চিকিৎসাসংক্রান্ত ন্যূনতম জ্ঞান কিংবা সনদপত্র নেই। তারা কেউ কেউ মাদকাসক্ত, অনেকে লেখাপড়াও জানেন না। অথচ তারা নিজেদের নামের আগে ডাক্তার লিখে রেখেছেন।
দৌলতদিয়া রহমান ফকীর পাড়ার কামাল খাঁ, নয়ন তালুকদার, পূর্ব উজানচরের ইসলাম খাঁ, আবজাল শেখসহ একাধিক খামারি জানান, তন্ময় নামের এক হাতুরে ডাক্তারই এখন এই এলাকার নামকরা ডাক্তার। রোজার ঈদের ১৫ দিন আগে থেকে কোরবানির ঈদ পর্যন্ত তিন মাসে চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা করে প্রত্যেক খামারির সাথে তার চুক্তি হয়েছে।
উজানচর ইউনিয়নের লুৎফর সওদাগর পাড়ার মঞ্জু সওদাগর, মোসলেম সওদাগর, ফজলু শেখ, চর করনেশনের আব্দুর রহিম, মালেক শেখ, ছোটভালা ইউনিয়নের নলডুবি গ্রামের আব্দুর রব, করিম মোল্লা, দেবগ্রাম ইউনিয়নের তেনাপচা গ্রামের জলিল শেখ, খালেক শেখসহ আরো অনেক অঞ্চলের খামারিরা আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের গরু-ছাগল মারা গেলেও চিকিৎসার জন্য ডাক্তার পাই না। সরকারি পশু হাসপালের ডাক্তারকে বললে তারা অনেক বেশি টাকা দাবি করেন। তা না হলে তারা আসেন না। তাই বাধ্য হয়েই আমরা ওই হাতুড়ে ডাক্তার দিয়েই পশু চিকিৎসা করাই।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: রাশেদুজ্জামান বলেন, আমাদের লোকবল সঙ্কটে খামারিদের চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা দেয়া সম্ভব হয় না। হয়তো এ কারণে কিছু অসৎ লোক চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা দিচ্ছেন।


আরো সংবাদ



premium cement