উখিয়ার কানা রাজার গুহা
- হুমায়ুন কবির জুশান উখিয়া (কক্সবাজার)
- ২১ মে ২০২৪, ০০:০৫
মিয়ানমার থেকে এক সময় বৌদ্ধধর্মাবলম্বী মানুষজন মাঝেমধ্যে পূজা-অর্চণা করতে এখানে আসতেন। সুড়ঙ্গের পাশের পাহাড়ে ছিল একটি মন্দির, সেখানে ভিক্ষু থাকতেন। বলছিলেন কাউয়ারখোপের উখিয়ারঘোনার প্রবীণ বাসিন্দা শহীদ উল্লাহ। যে স্থানটি নিয়ে কথা হচ্ছিল, সেটি উখিয়ার পরিচিত কানা রাজার সুড়ঙ্গ নামে। রামু উপজেলা থেকে পাঁচ কিলোমিটার পূর্বে কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের উখিয়ারঘোনায় পাহাড়ের নিচে এ সুড়ঙ্গের অবস্থান।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, এক চোখ অন্ধ বলে জনশ্রুতি থাকা এক রাখাইন রাজা নিজের আত্মরক্ষার্থে এখানে একটি গুহা নির্মাণ করেছিলেন বলে কথিত। গুহার মধ্যে ধনরতœ আছে বলে স্থানীয়রা একে আন্ধারমানিক নামেও ডাকে। ১৯৬০ সালে প্রথম রাশিয়ান তেল-গ্যাস অনুসন্ধানী একটি দল গুহাটি আবিষ্কার করে। ১৯৭৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার এক বিশেষজ্ঞ দল এ অঞ্চলে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান চালিয়েছিল। তবে কোনো তেল-গ্যাস পাওয়া যায়নি।
কক্সবাজার আর্ট ক্লাবের সভাপতি তানভির সরোয়ার বলেন, অঁাঁধার মানিকের প্রবেশমুখ ত্রিভূজাকৃতির মাটি থেকে ২৫ ফুট উঁচু। আনুমানিক ৭০ ফুট গভীর পর্যন্ত অনেক কষ্টে হামাগুড়ি দিয়ে গুহাটিতে প্রবেশ করেছিলাম। ঘরের মতো বড় খালি জায়গা আছে ভেতরে। সেখান থেকে আরো পথ বের হয়েছে। ভেতরে একটি বাড়ির মতো বিশালাকৃতির জায়গা আছে। তানভির সারওয়ার জানান, সরকারি প্রতœতাত্ত্বিক বিভাগে আন্ধারমানিক তালিকাভুক্ত হয়েছে। শিগগির গুহাটি খনন ও গবেষণার কাজ চালানো হবে। তাদের সাথে এ কাজে যোগ দেবেন ডেনমার্কের একদল গবেষক। এ কাজে উন্নত প্রযুক্তির স্ক্যানার ব্যবহার করা হবে।
স্থানীয় ইতিহাসবিদ শিরুপন বড়–য়া বলেন, বর্তমানে যে কানা রাজার গুহা বা আঁধার মানিকের সন্ধান পাওয়া গেছে, সে কানা রাজা হলো আরাকানের রাজা চিন পিয়ান। কিন্তু তার এক চোখ অন্ধ ছিল এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ১৭৯৮ সালে চিন পিয়ান মিয়ানমারের বর্মিরাজ কর্তৃক পরাজিত হয়ে কয়েক হাজার অনুসারীসহ নাফ নদ পার হয়ে কক্সবাজার অঞ্চলে পালিয়ে এসে এখানে বসবাস শুরু করেন। ই হারভের হিস্ট্রি অব বার্মা বইয়ের সূত্রানুসারে আরাকানের দেশপ্রেমিক রাজা চিন পিয়ান ১৮১৫ সালে আত্মগোপনে থেকে অসুস্থ অবস্থায় মারা যান। বলা হয়, তিনি এ আন্ধারমানিক বা গুহাতে আত্মগোপন করেছিলেন।
সম্প্রতি কানা রাজার সুড়ঙ্গে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্থানটি ঝোপঝাড়ে পরিপূর্ণ। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, পাহাড়টি বর্তমানে একজন দখল করে নিয়েছেন। সুড়ঙ্গটি রক্ষণাবেক্ষণে সরকারি কার্যক্রমের কথা থাকলেও এটি এখনো শুরু না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন তারা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা