চার সন্তানের মা ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে রাস্তায়
- ফখর উদ্দিন ইমরান কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ)
- ১৭ মে ২০২৪, ০০:০৫
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের পূর্বচর পাড়াতলা গ্রামের বৃদ্ধা জাহানারার বয়স ৭০ বছর ছুঁই ছুঁই। তিনি চার সন্তানের মা। তার দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে সন্তান রয়েছে। বহু কষ্ট করে তিনি দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। বয়সের ভারে তিনি কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন। বাধ্য হয়ে কটিয়াদী পৌর বাজারের বিভিন্ন দোকানে দোকানে লাঠি ভর দিয়ে কুঁজো হয়ে ঝুলি নিয়ে ভিক্ষা করছেন। জাহানারার এক খণ্ড জমি ছিল। তাও আবার তার দুই ছেলে কৌশলে তাদের নিজেদের নামে লিখে নিয়ে মায়ের গড়া ভিটা মহাসুখে বসবাস করছে।
পৌর সদরের কটিয়াদী সরকারি হাসপাতালের মোড়ে নয়া দিগন্তের এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘বাবা আমি গত কোরবানির ঈদে গরুর গোশত খাইছিলাম। এরপর আজ পর্যন্ত এক টুহরা গোশতও খাইবার ফারি নাই। এইবার রোজার ঈদেও এট্টু ভালা খাওন ফাইনি। তিনডা ছিঁড়া কাপড় দিয়ে বছর পার করছি। কিন্তু গত রোজার ঈদে একডা কাপড়ও ফাইনি।’
তিনি জানান, মুক্তিযুদ্ধের দুই বছর পর বিয়ে হওয়ার পর থেকে টেনেটুনে চলেছিল সংসার। স্বামী অলস আর ভবঘুরে। একসময় তিনি মানুষের বাড়িতে কাজ শুরু করেন। পরে স্বামী সফর উদ্দিনও (৭৭) অসুস্থ হয়ে বিছানায় শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। মেয়েরা মাঝেমধ্যে খোঁজ নয়। বর্তমানে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে কবরস্থানসংলগ্ন ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছেন। বেঁচে থাকতেই কবরস্থানই যেন হলো পিতা-মাতার আপন ঠিকানা। একটু বৃষ্টি হলেই ঘরে পড়ে পানি আর রাত হলেই শিয়াল আর বন্যপ্রাণীর শব্দে এভাবেই রাত কাটে এই দম্পতির।
মঙ্গলবার সরেজমিনে তার সাথে সাক্ষাৎ হলে তিনি জানান, প্রতি সপ্তাহের মঙ্গলবার কটিয়াদী বাজারে ভিক্ষা করে পাঁচ, ছয় শ’ টাকা আয় হয় তার। তা ছাড়া অল্প পরিমাণ টাকা বয়স্কভাতা পান।
তিনি কান্না বিজড়িত কণ্ঠে আরো বলেন, ‘শুনেছি বর্তবান প্রধানমন্ত্রী ঘর হারাদের ঘর দিয়ে আশ্রয় দেন। হামরা বইড়া-বুড়ী যদি তাইর কাছ থাইক্কা একডা ঘর ফাইতাম তাইলে মনডায় শান্তি ফাইতাম বাজান।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা