১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

এনায়েতপুরে রাজার হাতে বাদশাহীর স্বাদ

এনায়েতপুরে রাজার হাতে বাদশাহীর স্বাদ -

একটি ঝুপড়ি ঘরের ভেতরের চুলার কড়াইয়ে কসানো হচ্ছে গরুর গোশত। অন্য দিকের আরেকটি চুলায় প্রস্তুত হচ্ছে চিংড়িভাজা, রান্না হচ্ছে মুরগির গোশত ও যমুনা নদীর টাটকা মাছ। সব মিলিয়ে এক মহাভোজের আয়োজন চলছে। মাটির চুলায় দাউ দাউ করছে আগুন। সেখানে রান্না হচ্ছে নানা পদের তরকারি। খেতে আসা মানুষদের সামনেই রান্না হচ্ছে এসব খাবার। লোভনীয় এসব বাদশাহী খাবারের স্বাদ নিতে দূরদূরান্ত থেকে ভোজন রসিকরা আসেন সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে নৌকার ঘাটের রাজা মিয়ার হোটেলে।
রাজার হোটেলে গিয়ে দেখি একপাশে যমুনা নদীর টাটকা মাছ কেটে প্রস্তুত করা হচ্ছে, আরেক পাশে চলছে মসলা বাটার কাজ। প্রতিদিন স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয় দেশী জাতের মুরগি এবং দেশীয় গরুর গোশত।
রাজার হোটেলে রান্না হওয়া চিংড়ি ভুনা, গরুর গোশত কিংবা নদীর মাছের তরকারির সুনাম সবার মুখে। রাজার হোটেলে মাছের তরকারির মধ্যে থাকে যমুনা নদীর বোয়াল, আইর, বাইম, পিয়ালী, বাইলা, ইলিশ, বাচা, বাঁশপাতা, রুই, কাতলসহ আরো নানান পদের মাছ। এখানে প্রতিদিন পাঁচশ’ থেকে সাতশ’ লোকের খাবার তৈরি হয় দুপুরে। ১৩ জন কর্মচারীর পরিশ্রমে ও যতেœ রান্না হয় এ হোটেলে যতসব সুস্বাদু খাবার। খাবারের সুঘ্রাণ দূর থেকে ডেকে নিয়ে আসে ভোজন রসিকদের।
রাজা মিয়া আজ ১৭ বছর ধরে চালাচ্ছেন হোটেলটি। তিনি বলেন, রান্না করা তার পেশা না, এটা এখন তার নেশা হয়ে গেছে। শুরুতে এখানে খেতে আসতেন ঘাটের মানুষেরা। তার হাতের রান্না করা তরকারির স্বাদ দূরদূরান্তে ছড়িয়ে পড়লে ভোজন রসিকরা দলে দলে ছুটে আসেন তার হোটেলে। রসনায় নিয়ে যান বাদশাহী খাবারের স্বাদ। সামাল দিতে ১৩ জন কর্মচারী রেখেছেন তিনি।
মানিকগঞ্জ থেকে খেতে আসা রবিউল ইসলাম বলেন, রাজার হোটেলের সুনাম শুনে তার হোটেলে খেতে এসেছি। এ খাবারের স্বাদ ও নদীর মাছের আইটেমগুলো অতুলনীয়। অনেক দিন এ স্বাদ লেগে থাকবে মুখে।
নাটোর থেকে আসা মোকছেদ দম্পতি বলেন, আমরা রাজার হোটেলে খাবারের স্বাদ নিতে এসেছি। গরুর গোশত অসাধারণ স্বাদের হয়েছে।
হোটেল মালিক রাজা মিয়া নয়া দিগন্তকে বলেন, দেশীয় গরুর গোশত, দেশীয় জাতের মুরগি, বোয়াল, আইল, বাচামাছসহ প্রায় সব ধরনের মাছ রান্না করি আমি নিজে। খরিদ্দারদের সব সময় আমরা টাটকা খাবার দিই। প্রতিদিন দুই মন চালের ভাত, এক মন গরুর গোশত, ২০ হাজার টাকার মাছ অনায়াসেই বিক্রি হয়ে যায়। প্রতিদিন গড়ে ৬০ হাজার টাকার খাবার বিক্রি হয় এখানে।

 


আরো সংবাদ



premium cement