চর বিদ্যানন্দে নিভু নিভু শিক্ষার আলো
স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও প্রতিষ্ঠা করা হয়নি কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয়- মাহবুবার রহমান রাজারহাট (কুড়িগ্রাম)
- ১৪ মে ২০২৪, ০০:০৫
স্বাধীনতার পর ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও রাজারহাট উপজেলার তিস্তা নদীবিধৌত চর বিদ্যানন্দে মাধ্যমিক স্তরে কোনো বিদ্যালয় বা মাদরাসা প্রতিষ্ঠা হয়নি। ফলে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চর বিদ্যানন্দের শিশু ও কিশোররা।
জানা যায়, উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের একটি বৃহদাকার চরের নাম বিদ্যানন্দ। চর বিদ্যানন্দ মৌজা ও তৈয়ব খাঁ মৌজার আংশিক নিয়ে চর বিদ্যানন্দ গঠিত। এই চরকে অনেকে আনন্দবাজার নামেও চিনে। এক বিদ্যান ব্যক্তির নামে এই চরের নামকরণ হলেও স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানে শিক্ষার আলো তেমন জ্বলে ওঠেনি। এই চরে রয়েছে দু’টি গ্রাম, যেখানে জনসংখ্যা প্রায় আট হাজার। যাদের মধ্যে প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। কথিত আছে, বহু বছর আগে বিদ্যান নামের এক জমিদার ছিলেন এখানে। তার একমাত্র পুত্র নন্দের যৌথ নামকরণে গ্রামটির নাম হয়েছিল বিদ্যানন্দ।
গ্রামের পশ্চিম চর বিদ্যানন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিদ্যানন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং চর তৈয়ব খাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও মাধ্যমিক পর্যায়ে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি। গ্রাম দু’টি থেকে কোনো শিক্ষার্থীকে মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা গ্রহণ করতে হলে কয়েক কিলোমিটার পথ হেঁটে তিস্তা নদীর পাড়ে আসতে হয়। এর পর খেয়া নৌকায় তিস্তা পাড়ি দিয়ে উপজেলার ডাংরারহাট উচ্চবিদ্যালয় অথবা ডাংরারহাট আলিম মাদরাসায় যেতে হয়। এ কারণে অনেক পরিবারের শিশুদেরই পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর ছাত্রজীবনের ইতি টানতে হয়। এভাবেই দারিদ্র্যপীড়িত চর বিদ্যানন্দ ও চর তৈয়ব খাঁ গ্রামের শিশুরা এতোটা পিছিয়ে পড়ছে। সেই সাথে নানা ধরনের অশিক্ষা ও কুসংস্কারে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে গ্রামটি।
তবে কিছুসংখ্যক সচ্ছল পরিবার তাদের সন্তানদেরকে মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়ানোর জন্য পার্শ্ববর্তী রংপুরের কাউনিয়া বা পীরগাছা উপজেলার কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ে ভর্তি করিয়ে দেন। এ ক্ষেত্রেও সড়ক পথে তাদেরকে ৫-৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে স্কুল করতে হয়। চর বিদ্যানন্দ গ্রামের শিক্ষার্থী অভিভাবক আব্দুল করিম বলেন, ছেলেমেয়েদেরকে সরকারি প্রাইমারি পর্যন্ত পড়ানোর পর আর বেশি পড়ানো হয়ে ওঠে না। বীর মুক্তিযোদ্ধা ছানাউল্লাহ বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও আমাদের সন্তানদের সুশিক্ষার জন্য মাধ্যমিক পর্যায়ের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখানে গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।
চর বিদ্যানন্দ মৌজার ইউপি সদস্য হোসেন আলী বলেন, এই চরে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন এখন সময়ের দাবি। চর তৈয়ব খাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, এই এলাকায় প্রাথমিক পর্যায়ে মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। তারা পঞ্চম শ্রেণী পাস করার পর আর লেখাপড়া করে না। ফলে তাদের বাল্য বিয়ের শিকার হয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রব বলেন, সরকার তো সরাসরি কোনো বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে দেয় না। এলাকার লোকজন উদ্যোগ নিয়ে ও নিজেদের জায়গা জমি দিয়ে বিদ্যালয়ের কার্যক্রমটা প্রথমে শুরু করতে হবে। এর পর চাইলে আমরা সহযোগিতা করতে পারি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা