মলংচড়া ইউনিয়নে নির্বাচন বন্ধ ২১ বছর
- হেলাল উদ্দিন লিটন তজুমদ্দিন (ভোলা)
- ১২ মে ২০২৪, ০০:০৫
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার বড় মলংচড়া ইউনিয়নে সীমানা বিরোধের মামলার কারণে দীর্ঘ ২১ বছর ধরে কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। সর্বশেষ ২০০৩ সালে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন তজুমদ্দিন সরকারি কলেজের প্রভাষক মো: নূরনবী সিকদার। সীমানা বিরোধসহ বিভিন্ন অজুহাতে মামলা দিয়ে গত ২১ বছর ধরে তিনিই চেয়ারম্যান পদটি আঁকড়ে ধরে রেখেছেন। যদিও বর্তমানে ইউনিয়নটির একটি ওয়ার্ড ছাড়া বাকি ৮টি ওয়ার্ডের কোনো অস্তিত্ব নেই। মেঘনার ভাঙনে ওই আটটি ওয়ার্ড পুরোপুরি বিলীন হয়ে গেছে। এখন একটি ওয়ার্ড নিয়েই চলছে পুরো ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম।
মেঘনার ভাঙনে হারিয়ে গেছে ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব ভবনও। বর্তমানে পরিষদের কার্যক্রম চলে একটি টিনশেডের জড়াজীর্ণ ঘরে। বড় মলংচড়া ইউনিয়নে ভোটার রয়েছেন ৫ হাজার ২০০ জন। ইউনিয়নটি ভাঙনকবলিত হওয়ায় ভোটাররা বসবাস করছেন পার্শবর্তী উপজেলা বোরহানউদ্দিন, চরফ্যাশন, লালমোহনসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। এমনকি বড় মলংচড়া ইউপি চেয়ারম্যান নিজেও পার্শ্ববর্তী বোরহানউদ্দিন উপজেলায় বসবাস করছেন। বোরহানউদ্দিন উপজেলার বোরহানগঞ্জ বাজারে তার ইসলামি ব্যাংকের এজেন্ট শাখা ও তজুমদ্দিন ডাচবাংলা এজেন্ট ব্যাংকের যৌথ ব্যবসা থাকায় ব্যবসা ও চাকরিতে সময় দিয়ে পরিষদের কাজে তেমন একটা সময় দিতে পারেন না বলে জানান চরের বাসিন্দারা।
স্থানীয়দের দাবি, চেয়ারম্যান নূর নবী সিকদার নিজে ক্ষমতায় থাকার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে পাশর্^বর্তী ২নং সোনাপুর ইউনিয়নের সাথে সীমানা বিরোধের মামলা দিয়ে রেখেছেন, যাতে নির্বাচন বন্ধ রাখা যায়। যদিও সোনাপুর ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, কিন্তু নানা কৌশল অবলম্বন করে ওই মামলার উছিলায় চেয়ারম্যান নূর নরী সিকদার নিজের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন বন্ধ করে রেখেছেন।
বড় মলংচড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই চৌধুরী বলেন, ইউনিয়নের বিরাট একটি অংশ নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে যাওয়ায় বেশির ভাগ মানুষ পার্শ্ববর্তী উপজেলাগুলোতে পরিবার নিয়ে বসবাস করছে। এ ছাড়া কিছু লোক মেঘনা নদীর বুকে নতুন জেগে ওঠা চর রাইয়ানেও বসবাস করতে শুরু করেছেন। বিনা নির্বাচনে ২১ বছর ক্ষমতায় আছেন এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূর নরী। তিনি সীমানা বিরোধের একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাচন বন্ধ করে পুরো ইউনিয়নটিতে একক রাজত্ব চালাচ্ছেন।
বড় মলংচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরনবী সিকদার বলেন, ইউনিয়নটির ৯০ শতাংশ মেঘনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন নতুন করে একটি চর জেগেছে। সেখানে মানুষজনের বসতি শুরু হয়েছে। ওই চরে আটটি ওয়ার্ড পুনর্গঠনের কার্যক্রম চলছে। সেটি সম্পূর্ণ হলেই হয়তো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া নির্বাচন বন্ধের পেছনে আমার কোনো হাত নেই।
এ বিষয়ে তজুমদ্দিন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো: মঞ্জুর হোসেন বলেন, বড় মলংচড়া ইউনিয়নটির অধিকাংশ এলাকাই নদীতে ভেঙে গেছে। এখন একটি মাত্র ওয়ার্ড রয়েছে। নতুন জেগে ওঠা চরে বর্তমানে তেমন বসতি না থাকলেও কাগজে-কলমে আরো আটটি ওয়ার্ড পুনঃবিন্যাশের চেষ্টা চলছে। স্থানীয় সরকার শাখা যদি ওই ইউনিয়নের ওয়ার্ড পুনঃবিন্যাশ করে, তাহলে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা