১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

দোয়ারাবাজারে চোরাচালানে বাড়ছে শিক্ষার্থীদের তৎপরতা

চোরাচালানের পণ্য আনা-নেয়ার কাজে শিক্ষার্থীরা : নয়া দিগন্ত -

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের চোরাচালানে জড়িয়ে সক্রিয় করে তুলেছে চোরাচালান চক্র। উঠতি বয়সী এসব শিক্ষার্থীর টাকার প্রলোভনে ফেলে চোরাচালানের পণ্য পাচার কাজে ব্যবহার করে নিজেদের ফায়দা লুটছে চোরাকারবারি সিন্ডিকেট। অল্প বয়সে স্বল্প সময়ে অধিক টাকা রোজগার করায় এসব স্কুল, মাদরাসা-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা শিক্ষা ও সামাজিকতা হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। চোরাকারবারে জড়িয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ অভিভাবকদের শাসন মানছে না। আবার কোনো কোনো অভিভাবক টাকার প্রলোভনে সন্তানদের আরো সক্রিয় করে তুলছে। এলাকার হাটবাজার থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটেও এদের বেপরোয়া চলাফেরা লক্ষ করা গেছে।
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, শুধু নরসিংপুর নয়; দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন বাংলাবাজার, বোগলাবাজার, লক্ষ্মীপুর এবং সুরমা ইউনিয়নেও একই অবস্থা।
জানা গেছে, সীমান্তবর্তী ওইসব এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নবম-দ্বাদশ শ্রেণী পড়–য়া প্রায় ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী বছরে ঝড়ে পড়ছে। ঝরে পড়া এসব ছাত্রের একটি অংশ চিনি সুপারিসহ নানান চোরাচালান পণ্য পাচারের কাজে জড়িয়ে পড়ছে। আবার অনেকেই বেশি টাকার লোভে সর্বনাশা মাদক সরবরাহ কাজেও জড়াচ্ছে।
আরো জানা গেছে, সীমান্তে চোরাচালানের কাজে উঠতি বয়সী শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ মোটরসাইকেলে বস্তা বেঁধে মাদকদ্রব্য ও চিনির বস্তা এনে চোরাকারবারি মাফিয়াদের নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে দেয়। আবার কেউ একই কায়দায় বাংলাদেশ থেকে নানা জাতের পণ্য সীমান্তের ওইপারে ভারতীয় এলাকায় পৌঁছে দিচ্ছে। কেউ কেউ গরু, মহিষ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন এলাকায় নিচ্ছে। কেউ আবার বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বালতির মাধ্যমে কাঁদে করে সীমান্ত পারা পারে কাজ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চোরাকারবারে নিয়োজিত যুবকদের অনেকেই গত এক বছরে নিজেরাও হয়ে উঠেছে একেকজন চোরাচালান সিন্ডিকেটের সদস্য ও প্রচুর অর্থবিত্তের মালিক।
শিক্ষার্থী ও উঠতি বয়সী যুবকরা চোরাচালান কাজে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি স্থানীয় ভাবে ভয়ঙ্কর ও আপত্তিজনক উল্লেখ করে স্থানীয় নরসিংপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুর উদ্দিন আহমদ বলেন, অভিভাবকদের লোভের কারণে যুবসমাজ আজ নষ্টের দারপ্রান্তে। অবৈধভাবে অধিক টাকা উপার্জনের প্রলোভনে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বাধানিষেধ না করায় তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে। স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করেও কোনো সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি প্রশাসনের ঊর্ধŸতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
দোয়ারাবাজার থানার ওসি বদরুল হাসান বলেন, কম বয়সী স্কুল-মাদরাসার শিক্ষার্থীদের চোরাকারবারে জড়িতের বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও অভিভাবকদের আরো সচেতন হতে হবে। পুলিশ চোরাচালান বন্ধে বদ্ধপরিকর।


আরো সংবাদ



premium cement