শৈশব থেকেই লাগামহীন জীবনযাপন ছিল লামিয়ার
তনু চেয়ারম্যানকে খুঁজছে পুলিশ- বরগুনা প্রতিনিধি
- ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
ছোট বেলায় বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ, মায়ের অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে যাওয়া এবং সৎ মায়ের সংসারে অযতœ অবহেলায় বেড়ে ওঠা লামিয়া শৈশব থেকেই লাগামহীন জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। বরগুনার আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ আমতলীর বাহাদুর আকনের মেয়ে ইসরাত জাহান লামিয়ার বয়স যখন মাত্র ১৩ বছর, তখন পার্শ্ববর্তী টিয়াখালী গ্রামে বিয়ে হয় তার। কিন্তু সেই স্বামীকে পছন্দ না হওয়ায় টিকেনি সেই সংসার।
লামিয়ার বয়স যখন ২০, তখন স্থানীয় এক আবাসিক হোটেলে লামিয়াকে দুই যুবকের সাথে পাওয়া যায়। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে সালিস ও পরবর্তীতে মামলা মোকদ্দমায় পর্যন্ত গড়ায়। প্রথম স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর বরিশালে নিজের পছন্দে চাকরিজীবী এক ছেলের সাথে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। দু’জনের সম্পর্কটা ভালোই ছিল। কিন্তু সম্প্রতি ভিডিও ভাইরালের কবলে পড়েন লামিয়া।
গত ২২ এপ্রিল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হোসেন রেজা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১০ এপ্রিল বরগুনার তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবুল কবির, পচাকোরালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক, নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু ও তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনাজুল আবেদিন মিঠু বরগুনা পুলিশ সুপারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয়, উপজেলা আওয়ামী লীগের জনৈক নেতা অর্থের বিনিময়ে জনৈক তরুণীকে ব্যবহার করে তাদের অন্তরঙ্গ ভিডিও গোপনে ধারণ করে। পরে হোয়াটসঅ্যাপে সেই ভিডিও পাঠিয়ে তাদেরকে ব্ল্যাকমেইল করা হয়েছে। বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখার ইনচার্জকে নিয়োজিত করা হয়।
জেলা গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তারা অনুসন্ধানকালীন প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লামিয়াকে ও তার সহযোগীকে আটক করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গোপনে ধারণকৃত অশ্লীল ভিডিও সংবলিত পেনড্রাইভ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী কামরুজ্জামান বাচ্চুর অভিযোগের ভিত্তিতে তালতলী থানায় পর্নোগ্রাফি আইনে পাঁচটি মামলা হয়।
তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও তনু চেয়ারম্যানকে খুঁজছে পুলিশ। টার্গেট ছিল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন ও আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে সুবিধা নেয়া। নিজ দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ওই নারীকে দিয়ে তাই ফাঁদ পাতা হয়েছিল। তবে, শেষ মুহূর্তে এসে নিজের জালে নিজেই আটকে গেছেন বরগুনার তালতলী আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনু। উপজেলার ছোট বগি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এই আওয়ামী লীগ নেতাকে এখন হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। ফাঁদে ব্যবহার করা নারী ও তার সহযোগীর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানায় পুলিশ।
ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ :
চলমান এপ্রিল মাস। তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদিন মিঠুর একটি আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর পর একে একে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের আরো তিন নেতার আপত্তিকর ভিডিও। তারা মামলায় প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কৌশলে ভিডিও ধারণ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ আনেন। এসবের জন্য দায়ী করা হয় ভিডিওতে থাকা তালতলীর বাসিন্দা ইসরাত জাহান লামিয়া ও তার সহযোগী একই উপজেলার পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম সবুজ ফকিরকে।
এ বিষয়ে স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান তৌফিকুজ্জামান তনু বলেন, কী কারণে আমাকে এসবের সাথে জড়ানো হচ্ছে বুঝতে পারছি না। কেউ একজন বললেই কি আমি দোষী হয়ে যাব? যারা দায়িত্বশীল পদে থেকে অন্যায় করল, অথচ বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তারা। আর কিছু না করেও আমিই এখন পালিয়ে আছি। আইনি সমস্যা আমি আইনগতভাবেই মোকাবেলা করবো।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা