চিরিরবন্দরে ইছামতি নদীতে ইরি-বোরো চাষ
- আফছার আলী খান চিরিরবন্দর (দিনাজপুর)
- ৩১ মার্চ ২০২৪, ০০:০৫
এক সময়ের খরস্রোতা ইছামতি নদী নাব্য হারিয়ে ক্ষেতের জমিতে পরিণত হয়েছে। নদীটি এখন সমতল ভূমিতে পরিণত হয়েছে। এ নদীর বুকে এখন চাষ হচ্ছে ইরি-বোরো ধান। অনেক স্থানে নদী ভরাট করে হয়েছে বেদখল। শুষ্ক মৌসুমের আগেই নদীটি শুকিয়ে যায়। নদীটি শুকিয়ে যাওয়ায় হারিয়ে গেছে অনেক দেশীয় প্রজাতির সুস্বাদু মাছ ও জলজ প্রাণী। এতে জেলেরা পেশা পরিবর্তন করে চলে যাচ্ছে অন্য ভিন্ন পেশায়। অথচ এক সময় এ নদীতে বড় বড় পালতোলা নৌকা চলত। এসব নৌকায় মানুষসহ বিভিন্ন পণ্য আনা-নেয়া হতো। কিন্তু আজ আর নৌকা চালানোই সম্ভব নয়। এখন যে কেউ দেখলে এটা নদী তা বিশ্বাসই করতে চায় না। কারণ পানি না থাকায় নদীর বুকজুড়ে সমতল ভূমিতে চাষ হচ্ছে ইরি-বোরো ধান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঐতিহ্যবাহী ইছামতি নদীটি দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ছাতিয়ানগড় বিল থেকে উৎপত্তি হয়ে চিরিরবন্দর উপজেলার ওপর দিয়ে ৬৫ কিলোমিটার এলাকা প্রবাহিত হয়েছে। নদীটি চিরিরবন্দরের বিন্যাকুড়িহাটে গিয়ে একটি ছোট যমুনা ও আরেকটি মরা নদী নামে দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে।
নদীটি এখন অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে। এ নদীর বুকজুড়ে এখন চলছে ইরি-বোরো ধানের আবাদ। এক সময়ের খরস্রোতা এ নদীর পানি দিয়ে কৃষকরা চাষাবাদ করতেন। মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করত অনেক জেলে পরিবার। হারিয়ে গেছে নদীর সুস্বাদু বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। বর্তমানে বছরের অধিকাংশ সময় নদীটি থাকে পানিশূন্য। নদীটিতে পানি না থাকায় চাষাবাদের উপযুক্ত অবস্থায় থাকে। তাই নদীতে প্রায় সময় চলে চাষাবাদ। পানি না থাকায় বদলে গেছে স্থানীয় জেলেদের জীবনযাত্রা। নদীর কিছু জায়গায় জায়গায় স্বল্প পরিমাণ পানি থাকলেও বেশির ভাগ অংশই থাকে পানিশূন্য ও সমতল কৃষি জমি। নদীটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি ধারণ ক্ষমতা কমে গেছে। নদীটি সংস্কার না হওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে অল্প বৃষ্টিতেই নদীর পাশের জমিগুলো পানিতে নিমজ্জিত হয়ে তলিয়ে যায়।
উপজেলার নশরতপুর, আলোকডিহি ও সাতনালা গ্রামের অনেকেই জানান, ইছামতি নদীতে বেশির ভাগ সময়েই পানি থাকে না। তাই বৃহত্তর রানীরবন্দর এলাকার জেলেরা তাদের পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছেন। কেউ কেউ অন্য পেশায় চলে গেছেন। আবার কেউ অন্যত্র চলে গেছেন। নদীতে পানি না থাকায় হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির সুস্বাদু মাছ। কৃষকরা শুষ্ক মৌসুমে ক্ষেতে পানি সেচ দিতে পারেন না। নদীকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে এখনই প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা নেয়া দরকার। নদীটি খনন ও জবরদখলকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করা প্রয়োজন। তা না হলে একসময় নদীটি সমতল ভূমিতে ও মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।
দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, জেলায় ছোট-বড় মিলে ২১টি নদী রয়েছে। পানি প্রবাহ ঠিক রাখতে ইতোমধ্যে পুনর্ভবাসহ ছয়টি নদী খনন করা হয়েছে। ইছামতি ও ছোট যমুনা নদীতে খনন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা