২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রুম্মান এখন বেকার যুবকদের আইডল

ভাণ্ডারিয়ায় কলেজছাত্রের ছাগল পালনে চমক
-

পিরোজপুর সোহরাওয়ার্দী কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রুম্মান সরদার। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি নিজের বাড়িতে গড়ে তুলেছেন ছাগলের খামার। ছাত্র জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে যাতে চাকরির জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে না হয়, সে জন্যই তার এই প্রচেষ্টা। পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার পশারীবুনিয়া গ্রামের কৃষক বাবুল সরদারের ছেলে তিনি। দেশী-বিদেশী জাতের ১৯টি ছাগল রয়েছে তার খামারে। এই ছাগলের খামারই তাকে এনে দিয়েছে পরিচিতি, সফলতা ও স্বার্থকতা। আজ তিনি পিরোজপুর জেলার শিক্ষিত বেকার যুবকদের কাছে আইডল।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, ২০২০ সালের প্রথম দিকে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে দু’টি ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল’ জাতের ছাগলের বাচ্চা কিনেছিলেন রুম্মান। সেই বাচ্চা দু’টি তিনি নিজের বাড়িতেই লালন পালন করতে শুরু করেন। এক বছর পর ওই ছাগল দু’টি আরো চারটি বাচ্চা দেয়। খুলে যায় তার লাভের খাতা। ভাবনায় পরিবর্তন আনেন তিনি। বড় পরিসরে একটি খামার করার জন্য তিনি খরকুটো ও বাঁশ দিয়ে ছাগলের জন্য একটি ঘর নির্মাণ করেন। যার নাম দেন ‘রুম্মান গোট ফার্ম’। এভাবেই শুরু তার ছাগল পালনের খামার।
শিক্ষিত বেকার এই যুবক মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে হয়ে ওঠেন একজন সফল উদ্যোক্তা। বর্তমানে তার খামারে ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল’ জাতের ছাগল ছাড়াও রয়েছে দেশী-বিদেশী মিলে ১৯টি ছাগল। যার মূল্য হবে প্রায় তিন লাখ টাকা। তিনি নিজেই ছাগলগুলোর পরিচর্যা করেন এবং পাহারা দেন। এ কাজে অবশ্য পরিবারের সদস্যরাও তাকে সহযোগিতা করেন।
রুম্মান সরদার বলেন, ছাগল পালনের পাশাপাশি আমি পড়ালেখাও চালিয়ে যাচ্ছি। চাকরির পেছনে ছুটিনি কখনো, ছুটবোও না। চাকরি পাওয়াটা এখন সোনার হরিণ। তাই, আমি চেয়েছিলাম নিজে উদ্যোক্তা হতে। তিনি বলেন, ছাগল লালন পালন আমি নিজেই করি। ছাগলগুলোর জন্য প্রতিদিন কাঁঠালপাতা ও ২-৩ বস্তা তাজা ঘাসের প্রয়োজন হয়। ছাগলগুলো বছরে দুই বার বাচ্চা দেয়। এখন অনেকেই আমার খামার থেকে ছাগল কিনে নেন।
রুম্মান বলেন, অনেকটাই স্বাবলম্বী আমি। আশপাশের অনেকেই আমার কাছে আসেন আমার ছাগলের ফার্ম দেখতে। ফার্ম করার পরামর্শ নিতে। আমিও যথাসাধ্য সহযোগিতা করি তাদের। আমি চাই, দেশের কোনো শিক্ষিত যুবক বেকার না থাকুক। সবাই স্বাবলম্বী হয়ে উঠুক। চাকরি করতে হবে কেন? আমরা মানুষকে চাকরি দেবো। রুম্মানের অভিযোগ, স্থানীয় উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর থেকে ছাগল পালনের বিষয়ে তিনি কোনো সহযোগিতা পাননি।
প্রান্তিক ও তরুণদের ছাগল পালনের জন্য সরকার কী ধরনের সহযোগিতা করছে তা জানতে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের ভেটেরিনারি সার্জন ডা: সোমা সরকারকে ও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: তরুণ কুমার শিকদারকে মোবাইল ফোনে বারবার কল দিয়েও তাদের পাওয়া যায়নি।


আরো সংবাদ



premium cement