২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন

পাটগ্রাম স্কয়ার হসপিটালে প্রসূতির মৃত্যুর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই দায়ী

-


পাটগ্রাম স্কয়ার হসপিটালে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে পম্পা রানী ওরফে খুকু মনি নামে এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন গত বৃহস্পতিবার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সাইফুল ইসলামের কাছে দাখিল করা হয়েছে। প্রতিবেদনে স্কয়ার হসপিটাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় খুকু মনির মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। পাটগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা: তৌফিক মোহাম্মদ শফিককে প্রধান করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্তে দেখা যায়, খুকু মনির প্রসব ব্যথা শুরু হলে গত মাসের ১৩ এপ্রিল সকালে স্কয়ার হসপিটালে ভর্তি করা হয়। এরপর অপারেশনের মাধ্যমে তার বাচ্চা প্রসব করানো হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে দুপুরে খুকুকে রংপুর হসপিটালে পাঠানো হয়। অপারেশনে খুকু মনিকে দুই ব্যাগ রক্ত দেয়ার প্রয়োজন হলেও হসপিটাল কর্তৃপক্ষ দিতে ব্যর্থ হয়। কোন চিকিৎসক তার অপারেশন করেছে থিয়েটারে রক্ষিত রেজিস্টারে তার কোনো উল্লেখ নেই। ওয়ার্ড বয়ও এ বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি। এতে ধারণা করা হয় বিএমডিসির স্বীকৃত কোনো চিকিৎসক দ্বারা পম্পা রানীর অপারেশন করানো হয়নি। তদন্ত কমিটি আরো দেখতে পায় হসপিটালে যন্ত্রপাতির অভাব ছাড়াও ল্যাব ফ্যাসিলিটি এবং দ্রুত রক্ত সঞ্চালনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় সামগ্রিক অর্থে তাদের অবহেলায় খুকু মনির মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

ডা: সাইফুল ইসলাম জানান, গত বছরের ৩০ জুন স্কয়ার হসপিটালের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও পরে তারা আর নবায়ন করেনি। ফলে তারা অবৈধভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে কোনো অনভিজ্ঞ টেকনিশিয়ানকে দিয়ে খুকু মনির অপারেশন করা হয়েছে। তবে ওই টেকনিশিয়ান কে, তা কেউ চেনে না বলে তদন্তে জানা গেছে। খুকু মনির পরিবারও তার মৃত্যুর জন্য স্কয়ার হসপিটাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছে। শনিবার গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন লালমনিরহাট সিভিল সার্জনের কাছে দাখিল করা হয়েছে।
জানা গেছে, পাটগ্রাম উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের হিতেষ চন্দ্র রায়ের মেয়ে খুকু মনির প্রসব ব্যথা শুরু হলে স্কয়ার হসপিটালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অপারেশনের পর তার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে রংপুর হসপিটালে পাঠানো হয়। কিন্তু রংপুর নেয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পরিবারের লোকজন ওই হসপিটালে ছুটে এলে সবাই পালিয়ে যায়। এ ঘটনা নয়া দিগন্তসহ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে স্থানীয় সরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে ৫ সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। কিন্তু তদন্ত কমিটি ঈদসহ বিভিন্ন কারণে গত বৃহ্স্পতিবার তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন স্থানীয় সরকারি হাসপাতলের আরএমও ডা: তাসমেরী তানহা, ডা: শাহীনুর রহমান সাগর, ডা: হাসান শাহরিয়ার শোভন ও ক্যাশিয়ার মোস্তাফিজুর রহমান।

 


আরো সংবাদ



premium cement