২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

লালমোহনের চরে শত শত মহিষ বাথান : অর্থনীতিতে নতুন আশা

লালমোহনের বেতুয়া নদীর তীরে বিস্তীর্ণ চরজুড়ে বিচরণরত মহিষ : নয়া দিগন্ত -

সবুজ ঘাসে ভরপুর ভোলার লালমোহন উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল। এখানে নতুন আশা জাগিয়েছে মহিষপালন। মহিষপালনে ভাগ্য ফিরেছে উপকূলীয় জনপদের বহু মানুষের। পাশাপাশি মহিষের দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য বিক্রি করে নগদ লাভের সম্ভাবনাও রয়েছে ব্যাপক। মূলত লালমোহন উপজেলাধীন ছোট বড় প্রায় ৮-১০টি চর রয়েছে। যার আয়তন কয়েক হাজার একরের বেশি।
বিস্তীর্ণ জঙ্গলে ঘেরা এসব চরের সবুজ ঘাসের বুকে দেখা মেলে শত শত মহিষ বাথানের। এসব চরসংলগ্ন আশপাশের এলাকা থেকে মহিষ বর্গা নেয়া চাষিরা ভাটার সময় চারণভূমিতে মহিষ ছেড়ে দেয়। এ সময় রাখালেরা খাল ও নদীর ¯্রােতে জাল পেতে মাছ ধরে সময় কাটান। সারা দিন ঘাস লতাপাতা খাওয়া শেষে বিকেলে রাখালের হাঁকডাকে নদী ও খাল সাঁতরে মহিষের দল গিয়ে আশ্রয় নেয় খোলা মাঠ অথবা মহিষ কিল্লায়। এই চরাঞ্চলে মহিষ পালন দেশের গ্রামীণ অর্থনীতিতে এনে দিয়েছে নতুন এক সম্ভাবনা।
উপজেলার মেঘনা নদীর মাঝে অবস্থিত আট নম্বর চরের মহিষ মালিক ফয়েজ আহমদ বেপারি বলেন, বর্তমানে আমার দেড়শ’ মহিষ রয়েছে, তার মধ্যে ২১টি বাচ্চা দিয়েছে। গত বছর জোয়ারের পানিতে আমার ১০টি মহিষ ভেসে গেছে। তিনি আরো বলেন, আট নম্বর চরে প্রায় দেড় হাজার মহিষ পালন করা হচ্ছে, কিন্তু এ চরে কিল্লা না থাকায় জোয়ার ও বন্যার সময় অনেক মহিষ নদীতে ভেসে যায়। আবার লবণাক্ত পানি পান করায় নানা ধরনের রোগ দেখা দেয়। চরে পশুডাক্তার না আসায় সমস্যায় পড়তে হয়।
স্থানীয় বারেক, হালিম, জসিমসহ বেশ ক’জন মহিষ রাখাল জানান, চর ছাড়া বড় পরিসরে মহিষ পালন করা সম্ভব নয়। গ্রামে ঘাসের সঙ্কট রয়েছে। তাই ভাটার সময় মেঘনা নদীর মধ্যে জেগে ওঠা চরে ঘাস খাওয়ানোর জন্য মহিষগুলোকে ছেড়ে দেয়া হয়।
একাধিক মহিষ মালিক জানান, একেকটি মহিষের পেছনে বছরে প্রায় ৩৩-৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে। বছর শেষে বাচ্চা ও দুধ বিক্রি করে অনেক টাকা আয় করেন তারা।
চরের গবাদিপশুর মালিক, বর্গাদারসহ খামারিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপকূলবর্তী চরাঞ্চলে মহিষ পালনে ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও রয়েছে কয়েকটি সমস্যা। যেমন চরগুলোর হাজার হাজার হেক্টর জমি প্রভাবশালী মহল ও বন বিভাগের দখলে রয়েছে। এসব চরে গবাদিপশু চরালে মাসোয়ারা দিতে হয়।
উপজেলায় মহিষ পালনের জন্য উপযোগী চরের মধ্যে রয়েছে আট নম্বর চর, বৈষ্যার চর, ১২ নম্বর চর, উড়ির চর, বাদশা মিয়ার চর, চর সৈয়দপুর, চর কচুয়াখালী এগুলো।
একাধিক মহিষ মালিকের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, আমাদের মহিষের দুধ ও দধি ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছে।
ফয়েজ বেপারি বলেন, শীতের শেষে নদীর পানি ৪-৫ মাস লবণাক্ত থাকে। আর এ পানি খেয়ে গরু-মহিষের পাতলা পায়খানা, খুরা রোগ, গলা ফুলা, গায়ের পশম ঝরে যাওয়া ও উকুনসহ নানা রকম রোগ হয়ে থাকে। অনেক সময় মহিষ রোগাক্রান্ত ও মরা বাছুর প্রসব করে। পাশাপাশি চরগুলোর মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া খালগুলোতে বাঁধ দিয়ে অবৈধভাবে বিষাক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করে মাছ শিকার করছে অসাধু জেলেরা। আর এসব পানি খেয়ে অনেক মহিষ মারাও যাচ্ছে।
মহিষ মালিক, (দুধের গোয়াল) দুধ ও দধি ব্যবসায়ীদের প্রাণের দাবি সরকারিভাবে যেন আট নম্বর চরসহ সব চরে জরুরি ভিত্তিতে কিল্লা ও নলকূপের ব্যবস্থা করা হয়। পশু চিকিৎসকের নজরদারিও কামনা করছেন তারা।
লালমোহন উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা: জয়াধর মুমু বলেন, গরু ও মহিষের রোগ দেখা দিলে তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে আমরা পরামর্শ দেবো। তিনি আরো বলেন, কিল্লা ও নলকূপের বিষয়টি জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে অবগত করা হবে। লালমোহনে গবাদিপশু পালনে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দূত হলেন উসাইন বোল্ট ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৩৭ বাংলাদেশে নতুন করে বাড়ছে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা হিট অ্যালার্ট নিয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের নতুন বার্তা ভান্ডারিয়ায় পিকআপ চাপায় বৃদ্ধ নিহত হোচট খেল লিভারপুল, পিছিয়ে গেল শিরোপা দৌড়ে যোদ্ধাদের দেখতে প্রকাশ্যে এলেন হামাস নেতা সিনওয়ার! ফের পন্থ ঝড়, ঘরের মাঠে গুজরাটকে হারাল দিল্লি ইউক্রেনকে গোপনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র গ্রেফতারের পর যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ আরো বেড়েছে ইউক্রেন যুদ্ধে দুর্নীতি, পুতিনের নির্দেশে গ্রেফতার রুশ উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী! 

সকল