গরু পাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট ঈদগাঁও বাজার
- আতিকুর রহমান মানিক, ঈদগাঁও (কক্সবাজার)
- ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০৫
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে চোরাই পথে মিয়ানমার থেকে হরহামেশাই শত শত গরু পাচার হয়ে আসছে। রামু উপজেলার পাহাড়ী জনপদ ঈদগড় ও পার্বত্য নাইক্ষংছড়ি উপজেলার সীমান্ত দিয়ে পাচার করে আনা এসব গরু-মহিষ ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়কসহ অন্যান্য সড়ক পথে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রথমে গরুগুলো বাইশারী ও ঈদগড়ে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে ঈদগড়ের পাহাড় বেয়ে চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কে পৌঁছে দেয়া হয়। এরপর এসব গরু চলে যায় দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক পরিচয়ধারী দুর্বৃত্ত ও এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের সমন্বয়ে গঠিত একাধিক সিন্ডিকেট গরু পাচারে সক্রিয়। এতে সরকারও বিপুল পরিমাণে রাজস্ব হারাচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, পার্বত্য বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী বাইশারী ইউনিয়নের আলিক্ষ্যং এলাকার সাথে মিয়ানমারের যোগাযোগ সহজ। এসব এলাকা দুর্গম ও গহীন বন পরিবেষ্ঠিত। এই বনের ভিতর দিয়ে মিয়ানমার থেকে গরু ও মাদক সহজেই এদেশে প্রবেশ করতে পারে। এজন্য পাহাড় কেটে সুরঙ্গের মত করে রাখা হয়েছে। মুলত সেই সুড়ঙ্গের মত পথ বেয়ে মিয়ানমার থেকে গরু, মাদক, ও অন্যান্য অবৈধ পণ্য এদেশে প্রবেশ করে।
আরো জানা গেছে, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নিয়মিত টহল না থাকায় মিয়ানমার থেকে আনোয়ার সাদেক ও রবি নামের মিয়ানমারের দুই চোরাকারবারী সিন্ডিকেট এই গরু পাচারের সাথে জড়িত। তাদের হয়ে এ দেশে কাজ করছে ঈদগাঁও ও ঈদগড় এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির গড়া সিন্ডিকেট।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, মিয়ানমার থেকে পাচার হয়ে আসা গরুগুলো এদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ে যাওয়ার জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট। বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্যংছড়ি, কক্সবাজারের রামু, চকরিয়া, ঈদগাঁও উপজেলার অর্ধশতাধিক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এসব সিন্ডিকেটের সদস্য। এসব অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের রয়েছে আলাদা আলাদা বাহিনী। তারা স্থানভেদে ৫শ, এক হাজার, দুই হাজার টাকার চুক্তিতে গরু পৌঁছে দিচ্ছে।
সড়ক পথ বিজিবির টহল থাকায় পাহাড়ি জনপদই তারা বেশি নিরাপদ মনে করে। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আনা এসব সিন্ডিকেটের সদস্য ও অস্ত্রধারীরা এতটাই শক্তিশালী যে কেউ তাদের বাধা দেয়ার সাহস করে না। গরু ও অন্যান্য পণ্য পাচারে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি কাজে লাগানো হয় স্থানীয় ছিঁচকে চোর ও ভবঘুরেদেরকে। সিন্ডিকেটের নির্দেশ মতো তারা গরু ও পণ্য পৌঁছে দেয় তাদের গন্তব্যে।
আরো জানা গেছে, গরু পাচার সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত রয়েছে বিভিন্ন হাট বাজারের ইজারাদাররাও। আইনশৃংখলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিতে তারা পাচারকারীদের হাতে বাজারের রশিদ তুলে দেন। এতে পাচার করা গরুটি স্থানীয় হিসেবে বৈধতা পেয়ে যায়। তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা গরুটি জব্দ করলেও আইনী ম্যারপ্যাচে তা ছেড়ে দিতে হয়।
তবে ঈদগাঁও বাজারের ইজারাদার রমজান আলী এ ধরণের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিক্রির জন্য বাজারে উঠা গরু ছাড়া অন্য কোন গরুর ক্ষেত্রে বাজারের রশিদ তারা দেন না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা