২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পাবনার ১২ নদী পানিশূন্য সমতল ভূমি অবৈধ দখলে

অগ্রহায়ণ মাসেই চিকনাই নদী পানিশূন্য : নয়া দিগন্ত -

পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের কারণে এ জেলার ১৬ নদীর মধ্যে ১২টির সমতল ভূমিই অবৈধ দখলে চলে গেছে অথবা ফসলি জমিতে পরিণত হয়েছে। চারটি নদীতে চলছে নাব্য সঙ্কট। এসব নদ-নদীর প্রায় ৫০০ কিলোমিটার নৌপথ ক্রমাগত পলি জমে ভরাট হয়ে নৌচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য, জীববৈচিত্র্য ও কৃষি খাত মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।
এক সময় এ অঞ্চলের নদ-নদীতে জীবিকার সন্ধানে ঘুরে বেড়াত প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। তাদের বেশির ভাগই এখন বেকার। অনেকেই বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন।
জেলার দক্ষিণে পদ্মা, পূর্বে যমুনা উত্তরে বড়াল ও হুড়াসাগর নদী প্রবাহিত। এসব নদীতে এখন দেখা দিয়েছে নাব্যতা সঙ্কট। কাকেশ্বরী ও সুতিখালী নদী এখন পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের নিষ্কাশন খাল এবং ইছামতি ও আত্রাই নদী সেচ খাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। রেগুলেটর নির্মাণ করায় চিকনাই নদী, বাদাইসহ বিভিন্ন নদী মাছের খামার ও ফসলি জমিতে পরিণত হয়েছে। এসব নদী শুকিয়ে যাওয়ায় সেচ ও পারিবারিক কাজ এখন গভীর-অগভীর নলকূপের ওপর নির্ভরশীল। দেশী প্রজাতির মাছ, জলজপ্রাণী ও জলজউদ্ভিদ ক্রমান্বয়ে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতিতে বিরাজ করছে মরুর রুক্ষতা।
জানা যায়, ১৯৭০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন নৌরুটে লঞ্চ ও নৌকা চলাচল করত। কিন্তু এখন আর এসব নদীপথ বছরের বেশির ভাগ সময় সচল থাকে না। নাব্যতা ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে সুচিন্তিত ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি পর্যায়ে জেলার নদীগুলো নিয়ে একটা অদ্ভূত উদাসীনতার কারণে দেশের নৌপথ আজ বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছে। প্রায় আট বছর হয়ে গেল কাজীরহাট ঘাটে ফেরি ভিড়ে না। পল্টুন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বেড়ায় নৌবন্দর পরিকল্পনা আংশিক বাস্তবায়নের পর এখন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
নদীপথে যাতায়াত আগের মতোই সুলভ। নৌপথে প্রতি লিটার জ্বালানি খরচ করে এক কিলোমিটার পথে ২১৭ টন মালামাল পরিবহন করা যায়। অন্য দিকে সড়ক পথে ট্রাকে এক লিটার জ্বালানি খরচ করে মাত্র এক টন মালামাল ওই পরিমাণ পথ পরিবহন করা যায়। নিয়মিত নদী ড্রেজিং না করায় নৌপথ কমতে কমতে এখন তলানীতে এসে ঠেকেছে। জেলায় সারা বছর কতটুকু নৌপথ চালু থাকে তারও জরিপ হয় না আজকাল।
দেশে নৌপথ উন্নয়নের প্রচেষ্টা শুরু হয় ১৯৫৮ সালের নভেম্বরে। অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ গঠনের মাধ্যমে। এ সময় ৩১ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে ২২টি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। পাঁচশালা পরিকল্পনার আওতায় প্রায় ৭০০ মাইল নৌপথ জরিপ করা হয়। তখন দেশে নদীপথের দৈর্ঘ্য ছিল পাঁচ হাজার ৪৮৪ মাইল। ১৯৬৪ সালে নৌ চলাচলের উপযোগী নদীপথের দৈর্ঘ্য ছিল পাঁচ হাজার মাইলের বেশি। এ সময় আরিচা-গোয়ালন্দ ও আরিচা-নগরবাড়ী ফেরি সার্ভিস চালু করা হয়। এরপর পাবনা জেলায় ইছামতি ছাড়া নদী উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য আর কোনো কাজ হয়নি।
১৯২৩ সালে জেনারেল নেভিগেশন রেলওয়ে কোম্পানি পরিচালিত স্টিমার সার্ভিস প্রতিদিন পাবনা ও পাকশীর মধ্যে চলাচল করত। গোয়ালন্দ থেকে ভারতের বিহারের পাটনা পর্যন্ত যে স্টিমার চলাচল করত সেটা বাজিতপুর হয়ে যেত। অপর দিকে যমুনা নদী দিয়ে বেড়ার নগরবাড়ী, ভারেঙ্গা, নাকালিয়া, স্থলচর, সিরাজগঞ্জ ও কালীগঞ্জ হয়ে আসাম প্রদেশে চলে যেত। এই সার্ভিস ছিল নিয়মিত।
পদ্মা নদী পাবনায় প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ সীমান্তজুড়ে প্রবাহিত। এ নদীতে আগে স্টিমার, মালবাহী বড় বড় নৌকা যাতায়াত করত। পানির স্তর কমে যাওয়ায় এ নদীতে এখন আর লঞ্চ ও বড় নৌকা চলে না। পদ্মার শাখা নদী ও বিলের ওপর দিয়ে সারা বছর পণ্যবাহী নৌকা চলাচল করত। কিন্তু এখন কেবল বর্ষাকালে পণ্যবাহী পানসি, কোশা ও ডিঙ্গি নৌকা চলাচল করে।


আরো সংবাদ



premium cement
ফরিদপুরে নিহতদের বাড়ি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী টিকটকে ভিডিও দেখে পুরস্কার, প্রভাব ফেলছে মানসিক স্বাস্থ্যে পাট শিল্পের উন্নয়নে জুট কাউন্সিল গঠন করা হবে: পাটমন্ত্রী মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেও নেতাকর্মীরা আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে : সালাম নবায়নযোগ্য জ্বালানি ৪০ শতাংশে উন্নীত করতে কাজ করছে সরকার : পরিবেশ সচিব সৌরশক্তি খাতে আবার মাথা তুলে দাঁড়াতে চায় জার্মানি ‘সরকারের সদিচ্ছার অভাবেই বিচার প্রক্রিয়ার ধীর গতি’ মোদি কি হিন্দু-মুসলমান মেরুকরণের চেনা রাজনীতিতে ফিরছেন? টাঙ্গাইলে বৃষ্টির জন্য ইসতেসকার নামাজ ফুলগাজীতে ছাদ থেকে পড়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু দোয়ারাবাজারে শিশু হত্যা মামলার আসামিসহ গ্রেফতার ২

সকল