২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মধ্যবিত্তের চাপা কান্না : গরিবের কষ্ট কেউ দেখে না

-

ভোগ্যপণ্যের বাজারে নেই স্বস্তি। এমন কোনো পণ্য নেই যার দাম বাড়েনি। চড়া পণ্যমূল্যে আঁতকে উঠছেন মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্ত ও খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে গ্যাস-বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম। ভোজ্যতেলের বাজারে কারসাজি তো রয়েছেই। বিশ্ব বাজারে কমছে গমের দাম, তবুও দেশের বাজারে বাড়ছে আটা-ময়দার দাম। চালের বাজারে অস্থিরতা। মাছ-গোশতের বাজারে আগুন। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শাকসবজির দামও। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির চাপও সবার আগে এসেছে সাধারণ মানুষের ওপরে। পোশাক-আশাক, খাদ্যবহির্ভূত পণ্য থেকে শুরু করে চিকিৎসা ব্যয় সব দিকেই বাড়তি মূল্য। আর এ সব কিছুর দাম বৃদ্ধির চাপে সবার আগে চিড়ে চ্যাপ্টা স্বল্প আয়ের মানুষ।
দিনমজুর আব্দুস সালাম বলেন, আগে প্রতিদিনই কাজ পেতাম। কোনো দিন কাজ না পেলে বন থেকে কাঠ এনে বাজারে বিক্রি করতাম। রোহিঙ্গারা আসার পর থেকে বন উজাড় হয়ে গেছে। কৃষি কাজে কম দামে রোহিঙ্গা শ্রমিক পাওয়ায় এখন আর সেরকম কাজ আমরা পাই না। আমাদের চলতে খুবই কষ্ট হয়। গরিবের কষ্ট কেউ দেখে না। মধ্যবিত্তের তো কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই, তাদের নিরব কান্না শোনার কেউ নেই। ধারকর্য করে সংসার চালাচ্ছি।
এক মধ্যবিত্ত পরিবারের কর্তাব্যক্তি শফিকুর রহমান। থাকেন মালভিটা এলাকায়। ৩০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একটি এনজিও সংস্থায়। স্বামী-স্ত্রী, চার সন্তান ও বৃদ্ধ মাসহ তাদের সাতজনের সংসার চলে এই আয়ে। কিন্তু সব কিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন আর কুলাচ্ছে না বেতনের টাকায়। তাই বাধ্য হয়ে কাজ শেষ করে রাতে টিউশনি করতে হচ্ছে তাকে। টিউশনির কথা স্ত্রী জানেন না। উখিয়াতে বারো থেকে ১৫ হাজার টাকার নিচে ভালোবাসা ভাড়া পাওয়া মুশকিল। শফিকুর আরো বলেন, যে বেতন পাই তা দিয়ে ঘরভাড়া ও চার সন্তানের লেখাপড়ার খরচ দিয়ে তেমন কিছু থাকে না। আর কুলাতে পারছি না। এক মাস আগে আম্মা খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার দেখিয়েছিলাম, তিনি বলেছেন পেটে টিউমার আছে, অপারেশনে ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা লাগবে। টাকার অভাবে মায়ের চিকিৎসা করাতে পারছি না। আপাতত ওষুধ খেয়ে দাবিয়ে রাখা হচ্ছে। সংসারের খরচই মেটাতে পারছি না, এখন এক লাখ টাকা কোথায় পাব। সংসারের ব্যয় মেটাতে রাতে তিনজন ছাত্রকে পড়াই। মাস শেষে তিন হাজার টাকা দেয়। তা দিয়ে টুকটাক বাজার খরচ হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement