২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভাঙনের মুখে আমতলী পৌর শহর

পায়রা নদীর ব্লক সরে ভাঙছে আমতলী পৌরশহর : নয়া দিগন্ত -

পায়রা নদীর স্রোত ও ভাঙনের তীব্রতায় শহর রক্ষা বাঁধের সিসি ব্লক সরে যাচ্ছে। সেই সাথে ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়েছে আমতলী পৌর শহর।
জানা যায়, গত ২৪ বছরেও সংস্কার হয়নি শহর রক্ষা বাঁধের সিসি ব্লক। দ্রুত সংস্কার করা না হলে নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে পাউবো অফিস, খাদ্যগুদাম, মুক্তিযোদ্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লঞ্চঘাট ও ফেরিঘাটসহ শতাধিক বাড়িঘর।
জানা ে গছে, ১৯৯৮ সালে আমতলী পৌর শহরকে পায়রা নদীর ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করতে ফেরিঘাট এলাকা থেকে পাউবোর অফিস পর্যন্ত এক হাজার ২০০ মিটার শহর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের অধীনে সিসি ব্লক স্থাপন করা হয়। ওই সময় নিম্নমানের কাজ করায় অল্পদিনেই ব্লক সরে যেতে থাকে। ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, মহাসেন ও রোয়ানু, বুলবুল ও আমফানের প্রভাবে আমতলী পৌর শহরসংলগ্ন পায়রা নদীর সিসি ব্লক সরে ও ভেঙে যাচ্ছে। এতে ফেরিঘাট, লঞ্চঘাট, কাঠপট্টি, পুরাতন লঞ্চঘাট, শ্মশানঘাট ও পানি উন্নয়ন বোর্ড এলাকাসহ শতাধিক বাড়িঘর নদী বক্ষে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০১৪ সালে সিডর প্রকল্পের আওতায় আমতলী পৌর শহরকে পায়রা নদীর ভাঙনের হাত থেকে রক্ষায় এক হাজার ২০০ মিটার ব্লক মেরামতের কাজ অন্তর্ভুক্ত করে। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমবিইএল ১১৫ মিটার পায়রা নদীর তীর সংরক্ষণে সিসি ব্লক সংস্কার কাজ করে। বাকি কাজ ফেলে রেখে চলে যায়। এ কারণেই পৌর শহর হুমকির মুখে পড়েছে বলে অনেকে বলেন। গত ২৪ বছরে বাঁধ সংস্কার না করায় অধিকাংশ ব্লক নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
গত রোববার পায়রা নদীসংলগ্ন শহর রক্ষা বাঁধ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে উৎপন্ন ঢেউ পায়রা নদীর তীরে আছড়ে পড়ছে। এতে আমতলী স্লুইসগেট এলাকায় বাঁধের দু’পাশের ব্লক সরে যাচ্ছে। বাড়িঘর ভেঙে যাচ্ছে। ফেরিঘাট, শ্মশানঘাট, সবুজবাগ মুক্তিযোদ্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লঞ্চঘাট ও খাদ্যগুদামসহ শতাধিক বাড়িঘর হুমকির মুখে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এলাকায়ও ব্লক সরে গিয়ে নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
আমতলী পৌর শহর রক্ষা বাঁধ এলাকায় ফার্নিচার ব্যবসায়ী শিপন মিস্ত্রি বলেন, সিডরের প্রভাবে ব্লক সরে গিয়ে নদীভাঙনের তীব্রতা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে এ এলাকায় বসবাসরত মানুষের দুর্ভোগ আরো ঘনীভূত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, খাদ্যগুদাম ঘাটসহ এলাকার অনেক ঘরবাড়ি ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। দ্রুত পায়রা নদীর ব্লক সংস্কারের দাবি জানান তিনি।
আমতলী পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, পায়রা নদীর ভাঙনে প্রতিদিনই পৌরশহরের আয়তন ছোট হয়ে যাচ্ছে। বহু স্থাপনা হুমকির মুখে পরেছে। পুরাতন সিসি ব্লক সরে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তিনি জানান, এ শহরকে রক্ষায় তিন কিলোমিটার পায়রা নদীর তীরে সিসি ব্লক নির্মাণ করা প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে দ্রুত সিসি ব্লক নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী মো: আজিজুল হক সুজন বলেন, পায়রা নদীর ভাঙন রোধে ৫৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁচ হাজার ২৫০ মিটার ব্লক নির্মাণ কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। সব প্রক্রিয়া শেষেই দ্রুত ব্লক নির্মাণকাজ শুরু হবে। নতুন ব্লক নির্মাণকাজ শেষ হলে শহর রক্ষা বাঁধের পুরাতন ব্লক সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement