২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

কিশোরগঞ্জে কর্মস্থান কর্মসূচির টাকা লুটপাট দৈন্যদশায় শ্রমিকরা

-

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাঁদখান ইউনিয়নে ৪০ দিনের কর্মস্থান কর্মসূচির প্রথম পর্যায়ের টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। শ্রমিকদের তিন হাজার থেকে সর্ব্বোচ্চ সাত হাজার করে টাকা দিয়ে তাদের বিদায় করা হয়েছে। অবশিষ্ট টাকা ভাগাভাগি হয়েছে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের মধ্যে। এ ছাড়াও তাদের গাফলাতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও নানা দুনীতির ফলে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের ২৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকা ফেরত গেছে। ফলে শ্রমিকরা আর্থিক দৈন্যদশায় দিনাতিপাত করছেন।
জানা গেছে, চাঁদখানা ইউনিয়নে ১৮৪ জন শ্রমিক প্রথম পর্যায় ৯টি প্রকল্পে কাজ করেন। কাজ শেষে প্রতিজন শ্রমিকের প্রতিদিন ৪০০ টাকা করে ৪০ দিনে ১৬ হাজার টাকা মজুরি পাওয়ার কথা। এ জন্য মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতি চালু করা হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান মেম্বাররা শ্রমিকদের রকেট অ্যাকাউন্ট করা সিমকার্ড নিজেদের জিম্মায় রেখে প্রতিজন শ্রমিককে তিন হাজার থেকে সাত হাজার করে মজুরি দিয়ে বিদায় করেন।
১ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রমিক লালবি বেগম বলেন, আমার রকেট অ্যাকাউন্ট করা সিমকার্ড মেম্বার হাসানুর এসে নিয়ে যান। কাজ শেষের অনেক দিন পর আমাকে ডেকে তিন হাজার টাকা হাতে দেন। আমি পাবো ১৬ হাজার টাকা সেখানে আপনি তিন হাজার টাকা কেনো দিলেন- এ কথা বলায় মেম্বার বলেন যে এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ আপনি পাবেন না। তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে অন্য শ্রমিকের নাম দিয়ে দেবো। একই কথা বলেন শ্রমিক রেনুফা বেগম, ছাহেরা বেওয়াসহ অনেকে। সাত হাজার টাকা পেয়েছেন একই গ্রামের ফুলমতি বেগম। কাজ করে এখন পর্যন্ত এক কানাকড়িও পানি অঞ্জলী রাণী, দিবারাণী, ঝড়িয়া বর্মণ ও হাতেম আলী।
৪ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রমিক শাহার বানু বলেন, মেম্বার জাহাঙ্গীর আমার পারিবারিক বিরোধের সুযোগ নিয়ে আমাকে একটি পয়সাও দেননি। আর ৬ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার বাহারুলের স্ত্রী রিক্তা বেগম কাজ না করে ১৬ হাজার টাকাই পেয়েছেন। আবার ৮ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার ওলিয়ার রহমানের নাম ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তালিকায় দিয়ে শ্রমিকের মজুরির টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু হাসনাত সরকারের সাথে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি দ্বিতীয় পর্যায়ের টাকা সরকারের কোষাগারে ফেরত দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, শ্রমিকদের টাকা চেয়ারম্যান-মেম্বাররা ভাগাভাগি করে নিয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চাঁদখান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান হাফির সাথে টাকা লুটপাটের ব্যাপারে কথা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপরে সচিব জানেন। আমি কিছু জানি না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। এখনো কেউ অভিযোগ করেননি।

 


আরো সংবাদ



premium cement