২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দশমিনার বিল-ঝিলে নাই হয়ে যাচ্ছে দেশী প্রজাতির মাছ

দশমিনার হাটবাজারে এসব দেশী মাছ এখন চোখেই পড়ে না : নয়া দিগন্ত -

পটুয়াখালী দশমিনায় বিলুপ্তির পথে রয়েছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে এক সময় এসব মাছ সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত হবে বলে শঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় সূত্র জানায়, ক্রমশই খাল, বিল, পুকুর ও নদ-নদীসহ মুক্ত জলাশয়গুলো মাছশূন্য হয়ে পড়ছে। হারিয়ে যাওয়া এসব মাছের স্বাদ ভুলে যাচ্ছে নতুন প্রজন্ম। নির্বিচারে মা মাছ নিধনের কারণে দেশীয় প্রজাতির মাছগুলো হারিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে উৎপাদন হ্রাসের পাশাপাশি মিঠা পানির ২৬০ প্রজাতির মাছের মধ্যে ৫৪ প্রজাতির মাছের অস্তিত্বই বিপন্ন। বিপন্নপ্রায় মাছের জাতের মধ্যে রয়েছে ঢেলা, পাবদা, দাড়কানা, মোয়া, রয়না, গোরপে, তিন কাঁটা আইড়, তেলটুপি, গাড্ডু টাকি, ভেদা, মাগুড়, বড় শৈল প্রভৃতি। ইদানীং পুঁটি, জাতটাকি, তিতপুঁটি, টেংরা, শিং, বালিয়া, চান্দা, বাইম, টেংরা, চান্দা, কাকিলা, খৈলসা, গজার মাছগুলোও হাটবাজারে তেমন চোখে পড়ে না। মাঝে মধ্যে পাওয়া গেলেও দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। নদী-নালা, খাল-বিল, গর্ত-ডোবা ক্রমান্বয়ে ভরাট হয়ে যাওয়া, মাছের প্রজনন ক্ষেত্র সংকুচিত হওয়া, বৃষ্টিপাত কমে যাওয়া, ছোট বড় জলাশয় সেচে মাছ ধরা, মা ও পোনা মাছ নিধনের কারণে অনেক প্রজাতির মাছ হারিয়ে গেছে।
লক্ষ্মীপুর গ্রামের প্রবীণ ফোরকান মিয়া বলেন, কিশোর বয়স থেকেই মাছ ধরাকে নেশা হিসেবে নিয়েছি। বিল থেকে মাছ ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে খেতাম। নানা কারণে দেশীয় প্রজাতির মাছগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। বিলে আগেকার মতো মাছ মিলছে না। উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের হারুন মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে থেকে মাছ ধরে হাটবাজারে বিক্রি করে সংসার চলত। কয়েক বছর ধরে আগের মতো আর মাছ পাওয়া যায় না। তার মতে অন্তত ১০-১২ প্রকারের দেশীয় প্রজাতির মিঠা পানির মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বাজারগুলোতে এ প্রজাতির মাছের সরবরাহ একেবারেই কমে গেছে।
দশমিনা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুব আলম তালুকদাল জানান, জলাশয় ভরাট, নদ-নদীর পানিশূন্যতা ও জনসংখ্যা বেড়ে যাওযায় মৎস্য আহরণের চাপ বেড়ে গেছে। অপরদিকে সময়ে অসময়ে সেচের কারণে এবং কৃষিজমিতে কীটনাশক ব্যবহারের প্রভাবে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে দেশীয় প্রজাতির মাছ চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement