২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মই দিয়ে উঠতে হয় তিন কোটি টাকার সেতুতে

মই দিয়ে সেতুতে ওঠা নামা করছে লোকজন : নয়া দিগন্ত -

বান্দরবানের লামা উপজেলার রূপসীপাড়া হয়ে সদর ইউনিয়নের পোপা খালের উপর তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের একটি সেতু এলাকাবাসীর কোনো কাজেই আসছে না। এক বছরের বেশি সময় ধরে সেতুটি নির্মিত হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় দুইপাড়ের মানুষের সেতুতে উঠতে হয় মই দিয়ে। সেতুর দুই পাশে রাস্তা না থাকায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২২ অর্থবছরে ‘লামা রূপসীপাড়া সড়ক হতে মেরাখোলা হয়ে ছোট বমু পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প’-এর পোপা খালের ওপর প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে ৬০ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। এক বছর আগেই সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়। নির্মাণের এক বছর পেরিয়ে গেলেও সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক করে না দেয়ায় সেতুটি এলাকাবাসীর কোনো কাজেই আসছে না।
এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে কথা হয় সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী চিংথোয়াই মার্মার সাথে। তিনি বলেন, সেতুর দুই পাশের অ্যাপ্রোচ সড়কের জন্য বরাদ্দ ছিল না। আপাতত মানুষ হেঁটে পারাপারের জন্য সেতুর দুইপাশে গাইডওয়াল তুলে বালু ফেলা হবে। বরাদ্দ পেলে অ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ করা হবে।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়ন থেকে পোপা সড়ক দিয়ে গেলে পাহাড়পাড়া এলাকায় সেতুটি চোখে পড়বে। পোপা খালের উপর নির্মিত দক্ষিণ-উত্তরমুখী সেতুটির উত্তর পাশে স্থানীয়রা হেঁটে পারাপারের জন্য ১৫-২০ ফুট গাছ দিয়ে মই নির্মাণ করেছেন। ঝুঁকিপূর্ণ সেই মই দিয়ে উঠতে গিয়ে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধ ও শিশুরা পড়ে আহত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন, আরাফাত মিয়া, মোহাম্মদ নুরুজ্জামান ও কমলা বেগম বলেন, এত টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হলেও কোনো উপকারে আসছে না। ভরা বর্ষা মৌসুমে সেতুর দুই পাশ পানির নিচে ডুবে থাকে। আর খরার সময় মই দিয়ে উঠতে হয়। আরেক বাসিন্দা মোবারক হোসেন বলেন, সেতুর দুই পাশে রাস্তা না থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসীকে চরম দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করতে হয়। রাস্তা না হলে এই সেতু কোনো কাজে আসবে না। এই সেতুটি দিয়ে দুই ইউনিয়নের ২০ হাজারের অধিক লোক চলাচল করে।
দুর্ভোগের বিষয়টি স্বীকার করেন রূপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা বলেন, গত সপ্তাহে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশেসিংকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংযোগ সড়ক নির্মাণে উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন। সদর ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন বলেন, সেতুটি সচল হলে আমার ইউনিয়নের ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের মানুষের যাতায়াতে সুবিধা হবে। এ ছাড়া রূপসীপাড়া ও লামা সদর ইউনিয়নের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে।


আরো সংবাদ



premium cement