১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

১০ বেডের হাসপাতালে ২০ বেড রমরমা চিকিৎসাবাণিজ্য

-

ফরিদপুরের আলোচিত আল মদিনা প্রাইভেট হাসপাতালটি ১০ বেডের অনুমোদন নিয়ে চালু করার পর সেখানে ২০ বেড বসিয়ে রমরমা চিকিৎসাবাণিজ্য চলছিল। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেটির লাইসেন্স নবায়নের কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত আল মদিনা প্রাইভেট হাসপাতালটি বন্ধ ঘোষণা করেছে। এক নারীর সন্তান প্রসবের সময় নবজাতকের কপাল কেটে গুরুতর জখম করার ঘটনায় শহরের পশ্চিম খাবাসপুরে অবস্থিত এই প্রাইভেট হাসপাতালের মালিকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ১০ বেডের জায়গায় এখানে ২০ বেডের হাসপাতাল চালানো হচ্ছিল। হাসপাতালটির পরিচালনার প্রয়োজনীয় নবায়নকৃত কাগজপত্র নেই। সরকারি নিয়ম হচ্ছে, প্রাইভেট হাসপাতালে ১০ বেডের জন্য তিনজন ডাক্তার এবং ছয়জন সনদধারী নার্স থাকতে হবে। কিন্তু ১০ বেডের জায়গায় ২০ বেডের এই আল মদিনা হাসপাতালে কোনো আবাসিক চিকিৎসকই নেই। একজন মাত্র চিকিৎসক রয়েছেন যিনি তিন বেলা এই হাসপাতালে এসে রাউন্ড দিয়ে যান। হাসপাতালটিতে যে কয়জন ডিপ্লোমা নার্স থাকার কথা তা নেই। এ ছাড়া এই হাসপাতালে মাত্র একজন ডিপ্লোমাধারী নার্স পাওয়া গেছে। হাসপাতালটিতে নার্সের চেয়ে আয়ার সংখ্যাই বেশি। ওটিতেও এই আয়ারাই নার্স পরিচয়ে কাজ করেন। হাসপাতালটির পরিবেশ অত্যন্ত অপরিচ্ছন্ন।
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা: ছিদ্দীকুর রহমান বলেন, আল মদিনা হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ নবায়নের কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তারা ১০ বেডের জায়গায় ২০ বেড নিয়ে হাসপাতাল চালাচ্ছিল। শনিবারের ঘটনার পর ওই হাসপাতালটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল গফফার সন্ধ্যায় জানান, নবজাতকের কপাল কেটে ফেলার ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। একজন আয়া ও মালিকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরো দু’জনকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি জানান, রাজবাড়ির রূপা বেগম বেগম নামে এক প্রসূতির সন্তান প্রসবের সময় তার পেরেনিয়ামের টিস্যু কাটার সময় নবজাতকের কপাল কেটে ফেলা হয়। ঘটনাটি জানাজানি হলে জেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এ দিকে ঘটনাটি জানতে পেরে জেলা সিভিল সার্জন ডা: ছিদ্দীকুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল আলম, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফাতেমা করিম সেখানে উপস্থিত হন। এরপর দুপুর ১২টার পরে সিভিল সার্জন ডা: ছিদ্দীকুর রহমান রূপা বেগম ও তার নবজাতক সন্তানকে বিএসএমএমসি হাসপাতালে ভর্তির জন্য পাঠান।
ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল আলম বলেন, এ জাতীয় ঘটনা কাম্য নয়। এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement