২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

বরগুনার মুক্তিযোদ্ধা পল্লীর বাসিন্দাদের দুর্বিষহ জীবন

বরগুনার মুক্তিযোদ্ধা পল্লীর ভেতরের অবস্থা : নয়া দিগন্ত -

বরগুনার মুক্তিযোদ্ধা পল্লীর অবস্থা এক কথায় শোচনীয়। এখানকার বাসিন্দারা সব রকম মৌলিক অধিকারবঞ্চিত। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের দুর্বিষহ জীবন কাটছে এখানে। সরকারের বরাদ্দকৃত এই পল্লীতে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট যেমন প্রকট, পাশাপাশি জলাবদ্ধতা, মশামাছির যন্ত্রণা ও নি¤œমানের ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ নানা কারণে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন পল্লীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
জানা যায়, বরগুনা সদর উপজেলার গৌরীচন্না ইউনিয়নের খাজুরতলা গ্রামে ২০০০ সালে মুক্তিযোদ্ধা পল্লীর উদ্বোধন করেন তৎকালীন খাদ্য উপমন্ত্রী বর্তমান বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। পুনর্বাসন করা হয় ৩০টি অসহায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে। তাদের জন্য দেয়া হয় ছয়টি গভীর নলকূপ, একটি ড্রেন। তবে সময়ের ব্যবধানে অকেজো হয়ে গেছে সব কয়টি নলকূপ। ময়লা আবর্জনায় স্তূপ হয়ে চাপা পড়ে গেছে ড্রেনটি। পয়ঃনিষ্কাশনের দুরবস্থার কারণে পল্লীর পরিবেশ এক কথায় অবর্ণনীয়। ময়লা পানিতে বংশ বিস্তর ঘটাচ্ছে মশা।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় ময়লা আবর্জনার স্তূপ হয়ে গেছে পুরো মুক্তিযোদ্ধা পল্লী। সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতায় নোংরা পানিতে হাবুডুবু খেতে হয় বাসিন্দাদের। ভাঙা রাস্তা ও বেড়িবাঁধ না থাকায় নানা সমস্যা মোকাবেলা করতে হয় তাদেরকে। মুক্তিযোদ্ধারা বলছেন, শত চেষ্টায়ও সমাধান হয়নি এসব সমস্যার।
বাসিন্দারা জানান, এখানে বসবাসরত মুক্তিযোদ্ধাদের সমস্যার যেন শেষ নেই। বেড়িবাঁধ না থাকায় সামান্য জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় ঘরবাড়ি, ভেঙে নিয়ে যায় রাস্তাঘাট। মুক্তিযোদ্ধারা দ্বারে দ্বারে ঘুরে এখন ক্লান্ত, তারা, কোনো লাভ হয়নি। কারো কাছে গুরুত্ব নেই মুক্তিযোদ্ধাদের সমস্যার।
মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম জানান, এখানে না থাকলে বোঝার উপায় নেই যে আমরা আসলে কতটা কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। স্বাভাবিক জোয়ারেও পানিতে তলিয়ে যায় রাস্তাঘাট, নলকূপ। ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে পানির সাথে ময়লা আবর্জনা ঘরের ভেতরে চলে আসে। এর সাথে থাকে সাপ ও পোকামাকড়ের ভয়।
মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী প্যাদা জানান, পল্লীর ভেতরের রাস্তাগুলো অনেক আগে থেকেই চলাচলের অনুপযোগী। কিছুদিন আগে রাস্তার খানাখন্দে পড়ে গিয়ে দুই মহিলার পা ভেঙে যায়। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের দিকে কারো কোনো নজর নেই। তা ছাড়া ময়লা আবর্জনার স্তূপে বাড়ছে মশার বংশবিস্তার।
পল্লীর আরেক মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মজিদ বলেন, আমরা ৩০টি পরিবার এখানে বাস করে আসছি। প্রতিটি পরিবারেই ৫-৬ জন করে সদস্য রয়েছে। এতগুলো লোকের জন্য মাত্র একটি টিউবওয়েল। তা থেকে ঠিকভাবে পানিও ওঠে না। জোয়ারের পানিতে ডুবে থাকে টিউবওয়েলটি।
মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক বলেন, আমাদের পল্লীর ড্রেনটির অবস্থা এতটাই খারাপ যে সবসময় ড্রেন থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। ড্রেনে বংশ বিস্তার করছে ডেঙ্গু মশা। বিশেষ করে বৃষ্টিতে দুর্গন্ধ বেশি হয়। একাধিকবার উপজেলা-জেলা প্রশাসনকে জানানোর পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এ বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান নয়া দিগন্তকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা পল্লীর বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খুব শিগগিরই আমি বরগুনার মুক্তিযোদ্ধা পল্লী পরিদর্শন করে সেখানকার বাসিন্দাদের অবস্থা স্বচক্ষে দেখবো। তাদের দুর্ভোগ দুর্দশা নিরসনের ব্যবস্থা করব।
বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সব সমস্যা সমাধান করবেন সরকার- এমনটাই প্রত্যাশ্যা মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের স্বজনদের।


আরো সংবাদ



premium cement
ড. ইউনূসের ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে যা বললেন তার আইনজীবী একনেকে ৮৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন সান্তাহারে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে যুবক নিহত জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : আব্দুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রের সেতু ভাঙ্গার প্রভাব পড়বে বিশ্বজুড়ে! নাশকতার মামলায় চুয়াডাঙ্গা বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ নেতাকর্মী কারাগারে হারল্যানের পণ্য কিনে লাখপতি হলেন ফাহিম-উর্বানা দম্পতি যাদের ফিতরা দেয়া যায় না ১৭ দিনের ছুটি পাচ্ছে জবি শিক্ষার্থীরা বেলাবতে অটোরিকশা উল্টে কাঠমিস্ত্রি নিহত রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদন

সকল