২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঠাকুরগাঁওয়ে আগাম জাতের ধানে কৃষকের মুখে হাসি

-

চলতি মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলসহ সব উপজেলায় আগাম জাতের ধান চাষ করে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এবার ধানের ফলনও ভালো হয়েছে।
উপজেলার ধর্মগড় কাশিপুর রাতোর নেকমরদ এলাকার পথ দিয়ে যেতে চোখে পড়ে বিস্তীর্ণ আমনক্ষেত। কোনো কোনো ক্ষেতের ধান পাকতে শুরু করেছে। ক্ষেত থেকে সেসব ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষকরা। এসব এলাকার কয়েকজন কৃষক জানান, এ বছর আমন ধানের উৎপাদন হচ্ছে একরপ্রতি (১০০ শতক) ৫৪ থেকে ৬০ মণ। খরচ হয়েছে ২৫ থেকে ২৭ হাজার টাকা। বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। সে হিসাবে প্রতি একরে উৎপাদিত ধান বিক্রি করে পাওয়া যাচ্ছে ৩৮ হাজার টাকার বেশি। এই ধান কাটার পর জমিতে আগাম আলু চাষের সুযোগ পাচ্ছেন তারা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, বছরের এই সময়ে আশ্বিন-কার্তিক মাস এলেই আগে উত্তরাঞ্চলে মঙ্গা বা আধা দুর্ভিক্ষ দেখা দিত। বেশির ভাগ মানুষের ঘরে খাবার থাকত না। আমন ধান ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত খাবার জুটত না। আগে আমন ধান উঠতে যেখানে আরো এক থেকে দেড় মাস সময় লাগত, সেখানে এই মুহূর্তে আমন ধান পেকেছে। বিনার উদ্ভাবিত ধানের এ জাতগুলোর অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এক দিকে উৎপাদন ভালো অন্য দিকে ১০০ দিনের মধ্যে পেকে যায়। এ ধান কেটে আলু, সরিষাসহ অন্যান্য ফসল করা যাবে। আশ্বিন-কার্তিক মাসে এই অঞ্চলে একসময় কাজের সঙ্কট ছিল। কৃষক-দিনমজুরসহ সবাই প্রায় বেকার হয়ে যেতেন। তা দূর করতে আগাম জাতের আমন ধান চাষ শুরু করা হয়।
উপজেলায় চলতি মৌসুমে এবার ২১ হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে কৃষকরা পাঁচ হাজার ১৪৫ হেক্টর জমিতে আগাম হাইব্রিড জাতের ধানের চাষ করেছেন। হাইব্রিড ছাড়াও উচ্চ ফলনশীল বিনা-১৭, ব্রি-৭৫, ব্রি-৮৭ জাতের ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। জেলায় এ পর্যন্ত ২৫০ হেক্টর জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে।
ভাংবাড়ি এলাকার কৃষক আবুল হোসেন দুই একর জমিতে হাইব্রিড ধানের চাষ করেছেন। এখন জমির সেই ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। আবুল হোসেন বলেন, এবার ফলনের পাশাপাশি ধানের দামও ভালো। আর এতেই কৃষকরা খুশি।
রাতোর গ্রামের আরেক কৃষক সফিকুল ইসলাম দুই বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করেছেন। ফলনের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, খরচ আর ধানের দাম মিলিয়ে এবার মোটামুটি লাভ হবে। ধান উঠলে যে টাকা হাতে আসবে, তা আবার আলুর আবাদে খরচ করবেন। কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, এখন ধানিজমিতে কৃষকরা বছরে তিনবার ফসল ঘরে তুলতে পারছেন। আগাম জাতের ধান চাষ, কাটা ও মাড়াইয়ের পরে বর্তমানে জমিতে আলু ও সরিষা চাষ করছেন। এ ফসল ৭৫ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে ঘরে তুলে সেখানে এখন বোরো ধানের চাষ করতে পারছেন। এতে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।


আরো সংবাদ



premium cement