২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

অভয়নগরে ভারী বর্ষণে ভেসে গেছে শত শত মৎস্যঘের

-

গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে যশোরের অভয়নগর উপজেলাসহ আশপাশের শত শত মৎস্যঘের, ফসলি জমি ও বসতবাড়ি পানিতে থই থই করছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মৎস্যঘের ব্যবসায়ীরা। তা ছাড়া বেশির ভাগ মাঠের ধান-সবজিসহ ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে যশোরের নি¤œাঞ্চল। অভয়নগরে পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তাঘাট স্কুল কলেজসহ অসংখ্য ঘরবাড়ির উঠান ও মাঠ তলিয়ে গেছে। সেই সাথে ভেসে গেছে শত শত মৎস্যঘের। নষ্ট হয়েছে রোপা আমন ও সবজির বীজতলা। উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আংশিক ক্ষতি হয়েছে রোপা আমন ও সবজির। অভয়নগর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে আমনের খুব একটা ক্ষতি হয়নি। কারণ এসব ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেলেও পরে পানি সরে গেছে। তবে সবজির কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। রোপা আমনের ক্ষতির পরিমাণ ১১৫ হেক্টর ও সবজি ৮০ হেক্টর। তবে লোকসানের মুখে পড়েছে এ অঞ্চলের মৎস্যঘের ব্যবসায়ীরা। টানা বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবদহ প্রভাবিত উপজেলার সুন্দলী ও চলিশিয়া ইউনিয়নের শত শত মৎস্যঘের।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, অভয়নগরের সুন্দলী ইউনিয়নের বিলঝিকরা, চলিশিয়া ইউনিয়নের কোটার দক্ষিণ লাট, চাত্রাবিল, কৈয়া বিলসহ এ অঞ্চলের সব ঘেরের পাড় পানিতে ডুবে আছে। নেট পাটা দিয়ে কোনো রকমে মাছ রক্ষার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। ধোপাদী, মশিয়াটি, সুজতপুর, বলার আবাদ, বেতভিটা, সরখোলা, দিঘলিয়াসহ অধিকাংশ গ্রামের একই চিত্র লক্ষ করা গেছে। কোটা গ্রামের ঘের ব্যবসায়ী শামীম তরফদার জানান, দুই দিনের বৃষ্টিতে তার ঘের সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে। সাধারণত বছরের এই সময়ে বিল ভাসে না। সেই হিসাবে কেউ মাছ আগে থেকে ধরেনি সামনে শীতের মৌসুমে ভালো দামে বিক্রির আশায়। অথচ একদিনের বৃষ্টিতে সব তলিয়ে গেছে।
এ দিকে অভয়নগরের নি¤œাঞ্চলের বসতবাড়ির আঙ্গিনার পানি ঘরে ঢুকে পড়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছে শত শত পরিবার। রান্নাঘরে পানি থই থই করায় খাওয়া দাওয়া নেই অধিকাংশ বাড়িতে। জীবন রক্ষার তাগিদে শুকনা খাবার খেয়ে দিন পার করছে নারী-পুরুষ শিশুরা। গবাদিপশুর ঠাঁই হয়েছে সড়কের উঁচু স্থান ব্রিজ কালভার্টের ওপরে।
বেতভিটার শঙ্কর মণ্ডল বলেন, বাড়ির উঠানে হাঁটুপানি, ঘরের ভিতর পানি। ছেলেমেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারুক হোসেন সাগর জানান, উপজেলার মৎস্যঘের ও পুকুর যে পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাতে প্রায় শত কোটি টাকার মাছ ভেসে গিয়ে চাষিরা পথে বসেছেন। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারি সহায়তা ছাড়া কোনো উপায় নেই তাদের।


আরো সংবাদ



premium cement