২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পায়রার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে রামরা ও তুলাতলা গ্রাম

-

বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া গ্রামের রামরা ও তুলাতলা এলাকায় পায়রা নদীর তীব্র স্রোতে ফের ভাঙন দেখা দিয়েছে। একই স্থানে আগেও তিনবার বেড়িবাঁধ ভেঙে নদীতে বিলীন হলে নতুন বেড়িবাঁধ দিয়েও ভাঙন ঠেকানো যায়নি। এখনই ভাঙন ঠেকানো না গেলে বিস্তীর্ণ এলাকা ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, পায়রা নদীর করাল গ্রাসে প্রায় ৬০০ মিটার এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। প্রবল স্রোতে বেড়িবাঁধ দ্রুত ভেঙে যাচ্ছে। গত বছর জিও ব্যাগ দিয়ে সাময়িকভাবে তুলাতলা এলাকায় ভাঙন রোধ করা গেলেও এবার বর্ষার শুরুতে ওই এলাকায় আবার ভাঙন শুরু হয়েছে। পায়রা নদীর তীরবর্তী রামরা ও তুলাতলা এলাকায় শতাধিক দোকান রয়েছে। বেশির ভাগ দোকানমালিক তাদের দোকান সরিয়ে নিয়েছেন। কিছু দোকান নদীতে চলে গেছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রবল স্রোতে রামরা-তুলাতলা এলাকার প্রায় ৬০-৭০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা তখন পায়নি কোনো সরকারি সহায়তা। ওই ব্যবসায়ীরা ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না উঠতে আবারো ভাঙনের মুখে পড়েছে তারা। ক’দিন ধরে লাগাতার বর্ষণে আবারো ওই এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। যেকোনো সময় বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা নদীতে তলিয়ে যেতে পারে। হুমকির মধ্য রয়েছে শতাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
এলাকার সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য হারুনা আইরিন বলেন, গত বছর তুলাতলা এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করলেও এবার তীব্র গতিতে ভাঙন শুরু হয়েছে। এখনই ভাঙন রোধ করা না গেলে যেকোনো সময় বেড়িবাঁধ ভেঙে আমার বাড়িসহ রামরা, জাঙ্গালিয়া, সোনার বাংলা ও পাতাকাটা গ্রামের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়বে। তুলাতলা এলাকার ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে আছে। আবারো জিও ব্যাগ না দিলে অসংখ্য বাড়িঘর পায়রা নদীতে চলে যাবে।
জাঙ্গালিয়া এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য আবদুস সত্তার জোমাদ্দার বলেন, আমি ও আমার বড় ভাই আবদুর রশিদ জেমাদ্দার দুইবার ঘর ভেঙে ভেতরে নিয়েছি। আমাদের লাখ লাখ টাকার জমি পায়রা নদীর ভাঙনে চলে গেছে। আবারো বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিতে হবে। সরকারি চাকরিজীবী আবদুস সোবহান বলেন, জাঙ্গালিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা নদীতে চলে গেছে। আমার জমি দিয়ে সেখানে মাদরাসা করেছি। কনক্রিটের ব্লক দিয়ে ভাঙন রোধ করতে না পারলে কয়েকটি গ্রাম নদীতে চলে যাবে।
বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, ওই এলাকার ভাঙন ঠেকাতে আমি সরকারের উচ্চপর্যায়ে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। কনক্রিটের ব্লক নির্মাণ করে নদী শাসন করার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার আলম নয়া দিগন্তকে বলেন, জিও ব্যাগের টেন্ডার হয়েছে। কিছু দিনের মধ্য জিও ব্যাগ ফেলে তুলাতলা এলাকায় ভাঙন রোধ করা হবে। রামরা এলাকাকে বড় প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। সরকার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করা যায়, ওই এলাকার ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে।


আরো সংবাদ



premium cement