২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

উত্তরাঞ্চলে জমাট বাঁধা সার রিপ্যাকিং করে সরবরাহ

উত্তরাঞ্চলে জমাট বাঁধা সার রিপ্যাকিং করে সরবরাহ -

উত্তরাঞ্চলের বাঘাবাড়ী ও নগরবাড়ী নৌবন্দর হাজার হাজার টন রাসায়নিক সার আকাশের নিচে স্ট্যাক দিয়ে রাখা হয়েছে। সারগুলো বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে বিদেশ থেকে আমদানি করা। মাসের পর মাস আকাশের নিচে পড়ে থাকায় বেশির ভাগ সার জমাট বেঁধে গেছে। জমাট বাঁধা সার গুদামে এনে হাতুড়ি দিয়ে গুঁড়া করে ভালো সারের সাথে মিশিয়ে নতুন বস্তায় রিপ্যাকিং করে উত্তরাঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছে।
এ ছাড়া দেশী-বিদেশী সার প্রতি বস্তায় ২ থেকে ৩ কেজি ওজনে কম পাওয়া যাচ্ছে। এই সার কিনে প্রতারিত হচ্ছেন কৃষকরা।
এ দিকে বেড়া উপজেলার নগরবাড়ীতে জমাট বাঁধা সার গুঁড়া করে রিপ্যাকিংয়ের সময় গত মঙ্গলবার (১৫ জুন) আমিনপুর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে সার জব্দ করে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বেড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুর আলী মেসার্স নবাব এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার হেলাল উদ্দিনকে ২ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের জেল দেন। পরে দুই লাখ টাকা জরিমানা দিয়ে আসামি ছাড়া পায়। এ দিকে একের পর এক ভ্রাম্যমাণ আদালতের জেল জরিমানাতেও থামছে না এই ভেজাল কারবার।
সরেজমিন বাঘাবাড়ী-নগরবাড়ী ঘুরে ও বন্দর সূত্রে জানা যায়, বিসিআইসি আমদানিকারকদের মাধ্যমে চীন, মিসর, সৌদি আরব, তিউনিসিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ইউরিয়া, ডিএপি, এমওপি ও টিএসপি সার আমদানি করে। পরে বিভিন্ন ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির মাধ্যমে ওই সার বাফার গুদামে পৌঁছে দেয়া হয়। সমুদ্র পথে বড় জাহাজে সার আমদানি করা হয়। পরে লাইটারেজ জাহাজে সার আনলোড করে বাঘাবাড়ী ও নগরবাড়ী বন্দরে আনা হয়। সেখান থেকে সড়ক পথে সার মজুদের জন্য উত্তরাঞ্চলের ১৪টি বাফার গুদামে পাঠানো হয়। বাফার গুদামগুলোতে জায়গা না থাকায় বাঘাবাড়ীর বড়াল নদীর উত্তর-দক্ষিণ পাড়ে এবং নগরবাড়ীতে যমুনা নদীর পশ্চিম পাড়ে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাব্যাপী সারের বস্তা স্তূপ করে রাখা হয়েছে। বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে শুকিয়ে শক্ত ও জমাট বেঁধে সার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বন্দরের ট্রান্সপোর্ট এজেন্ট ও বিসিআইসির বাঘাবাড়ী বাফার গুদাম সূত্রে জানা যায়, উত্তরাঞ্চলের সারে বাফার গুদামগুলো ভরা রয়েছে। ফলে বন্দরে যে পরিমাণ সার আসছে, তা বন্দর এলাকাতেই পড়ে থাকছে।
এ দিকে চট্টগ্রাম নৌবন্দর থেকে প্রায় পাঁচ হাজার টন রাসায়নিক সার বোঝাই ১০টি কার্গো জাহাজ বাঘাবাড়ী ও নগরবাড়ী নৌবন্দরে এসে নোঙর করেছে। অনেক জাহাজ আনলোডের অপেক্ষায় রয়েছে। নিয়মানুযায়ী জাহাজ বন্দরে পৌঁছার পর আনলোড করে সার ট্রাকে বাফার গুদামগুলোতে পৌঁছে দেয়ার কথা। কিন্তু গুদামগুলোতে জায়গা না থাকায় এই সার মাসের পর মাস বন্দরেই পড়ে থাকছে।
বেড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মসকর আলী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এভাবে পড়ে থাকায় এই সারের কার্যক্ষমতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে।
বাঘাবাড়ী বাফার গুদাম ইনচার্জ সোলেমান জানান, দেশে উৎপাদিত কাফকো ও যমুনার ইউরিয়া সারের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বিদেশ থেকে আমদানি করা জমাট বাঁধা ইউরিয়া সারের চাহিদা খুবই কম। কারণ এই সারের গুণগত মান নিয়ে কৃষকেরা আতঙ্কিত। ময়েশ্চারের কারণে ইউরিয়া সার জমাট বেঁধে গেছে। রাসায়নিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছিল। ল্যাব পরীক্ষায় জানানো হয়েছে সারের গুণগত মান ঠিক আছে।


আরো সংবাদ



premium cement