২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

উফশী ধানের নতুন জাতে সাফল্য

-

চলতি বোরো মৌসুমে রাজশাহী অঞ্চলে উচ্চফলনশীল (উফশী) নতুন জাতের ধান চাষে ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এ জন্য আগেই রাজশাহী, নওগাঁ, চাঁপাইনাবগঞ্জ ও নাটোর জেলার প্রায় ১০০ জন প্রান্তিক কৃষকের মধ্যে নতুন উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল বোরো জাতের ধান বীজ (ব্রি ধান ৭৪, ৮৪, ৮৮ ও ৯২ এবং ইঅট-৩), সার ও কীটনাশকসহ নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি-ওজজও) বিল মিলিণ্ডা গেইটস ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতায় ‘এগ্রি এলায়েন্স’ প্রকল্পের অধীনে এই ধান বীজ ও নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হয়। প্রকল্পটি ইরি ও বেসরকারি সংস্থা পিপলস ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (পিডিআই) যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে।
নতুন জাতের এই ধান চাষ করে রাজশাহী অঞ্চলের কৃষকরা আশানুরূপ ফলন পাওয়ায় ভীষণ খুশি। তাই কৃষকরা আগামীতে আরো ব্যাপক হারে উন্নত জাতের ধান বীজ কৃষকদের মধ্যে বিতরণের জন্য ইরির কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ জানান।
এদিকে উন্নতজাতের উচ্চফলনশীল ব্রি ৮১ ধানটি এরই মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে চাষিদের মধ্যে। রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, খুলনা, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকরা এই ধান চাষে সফলতা পাচ্ছেন বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। ২০১৭ সালে ব্রি উদ্ভাবিত ধানটি সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ব্রি ৮১ ধানের জাতটি ব্রি ২৮-এর পরিপূরক। কিন্তু এটি ব্রি ধান ২৮-এর চেয়ে চিকন। ঝড়বৃষ্টিতে ব্রি ২৮ হেলে পড়লেও নতুন ব্রি ৮১ ধান হেলে পড়ে না। এ ধানটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো- ধান পাকার পরও পাতাগুলো সবুজ থাকে। মাঝারি উঁচু জমি থেকে উঁচু জমিতে খুব ভালো ফলন দেয়। প্রতি হেক্টরে গড় ফলন ৬.৫ থেকে ৭ মেট্রিক টন।
সূত্রটি আরো জানায়, ব্রি ৮১ জাতের ধানের ফলন অনেক ভালো। বিঘাপ্রতি ৩১ মণ। ব্রি ২৮ ও ২৯ দীর্ঘদিন ধরে চাষ হলেও এর উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাচ্ছে। তাই এই নতুন ব্রি ৮১ জাতটি কৃষক পর্যায়ে দ্রুত সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বেসরকারি পর্যায়ে বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রাজশাহীর মোহনপুরের মিজান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আব্দুল হালিম বলেন, ইরি ও পিডিআই কর্তৃক প্রদত্ত বোরো মৌসুমে ডিলারদের মাধ্যমেও চাষি পর্যায়ে ধান বীজ ও সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
রাজশাহী অঞ্চলের পিডিআই-এর প্রকল্প সমন্বয়ক রনজিৎ দাস বলেন, নতুন জাতের এই ধান চাষ করে ফলন ও বাজার মূল্য বেশি পাওয়ায় কৃষকেরা ভীষণ খুশি। তাই আগামীতে কৃষকেরা ব্যাপক হারে এই ধরনের জাত আরো বেশি করে চাষ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। উচ্চফলনশীল ব্রি ধান ৭৪, ৮৪, ৮৮ ও ৯২ এবং ইঅট-৩ চাষ করে কৃষকেরা প্রায় সমপর্যায়ের এবং আশানুরূপ ফলন পেয়েছেন বলেও জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement