২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় ব্যর্থ তাঁত মালিকরা

শাড়ি পরা বাধ্যতামূলক চান তাঁতিরা
-

আর মাত্র কয়েক দিন পরেই ঈদ। সারা বছর অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে এই সময়টাতে বিক্রীত কাপড়ের লাভ ও পাওনাদারের দেনা পরিশোধের হিসাব নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয় তাঁত মালিকদের। ক্ষতিগ্রস্ত তাঁতিদের প্রণোদনা দেয়া, সুতার দাম কমিয়ে আনা, ভারতীয় শাড়ি আমদানি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া, সরকারি-বেসরকারি অফিসে নারীদের শাড়ি পরা বাধ্যতামূলক করাসহ বেশ কিছু দাবি জানিয়েছেন তাঁত মালিকরা।
শ্রমিকদের বেতনের সাথে বোনাস ও ঋণের চাপে নাজেহাল অবস্থা এখন তাঁত মালিকদের। শ্রমিকদের বেতন দেয়াটাই এখন দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায়ও ব্যর্থ হয়েছেন তাঁত মালিকরা।
গত বছরের মতো এবারো করোনায় লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্প। ঈদ মৌসুমের শেষ সময়েও ক্রেতা শূন্য টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ির হাট। সদর উপজেলার করটিয়া, বাজিতপুর, কালিহাতী উপজেলার বল্লা ও যোকেরচর শাড়ির হাটগুলোতে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। যার ফলে অবিক্রীত শাড়ি নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন তাঁত মালিক ও ব্যবসায়ীরা। সপ্তাহে দু’দিন হাট বসে। এতে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় কোটি টাকার শাড়ি কাপড় বিক্রি হয়। বর্তমানে তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। টাঙ্গাইলের বৃহৎ এই শিল্পকে বাঁচাতে সরকারের কাছে নানা দাবি জানিয়েছেন তাঁত মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
গত বছর করোনায় লকডাউনে তাঁত শিল্প বন্ধ থাকায় বেকার হয়েছে হাজারও শ্রমিক। ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল তাঁত মালিকরা। এবার ঈদে তারা সেই ঘাটতি পূরণে আশায় বুক বেঁধে ছিল। কিন্তু এবার সেই লকডাউনেই আশায় গুড়ে বালি। শাড়ি বিক্রি করে লাভ তো পরের কথা বরং কত ক্ষতি হচ্ছে, সেই হিসাব কষেই দিন পার করছেন তাঁত মালিকরা। অন্য দিকে ক্ষতিগ্রস্ত তাঁতিদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নেই কোন প্রণোদনার ব্যবস্থা।
বাতাঁবোর টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাজিতপুর বেসিক সেন্টার সূত্রে জানা যায়, এ সেন্টারের ৩২টি প্রাথমিক তাঁতি সমিতি ও তিনটি মাধ্যমিক সমিতির দুই হাজার ২৬৭ তাঁত মালিকের মোট ১২ হাজার ৪২৯টি তাঁত রয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজার ৬৭৩টি তাঁত আগে থেকেই বন্ধ এবং ৯ হাজার ৭৫৬টি তাঁত চালু ছিল। মূলত এ বেসিক সেন্টারের তাঁতগুলোয় মিহি সুতার ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল শাড়ি তৈরি হয়ে থাকে।
বল্লা (কালিহাতী) বেসিক সেন্টারের সূত্র জানায়, এ সেন্টারের ১৭টি প্রাথমিক তাঁতি সমিতি ও একটি মাধ্যমিক তাঁতি সমিতির অধীনে দুই হাজার ১২৪টি তাঁত ফ্যাক্টরি মালিকের ১৮ হাজার ১৭৫টি তাঁত রয়েছে। এ বেসিক সেন্টারের তাঁতগুলোতে অপেক্ষাকৃত মোটা সুতার শাড়ি উৎপাদিত হয়ে থাকে।
তাঁত মালিক মমিনুর রহমান জানান, টাঙ্গাইলের অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি হচ্ছে তাঁত শিল্প। গত বছর করোনায় ও বন্যায় তাঁত বন্ধ হওয়ায় অনেক শ্রমিক বেকার হয়েছে। এবার বেচা-বিক্রি না হওয়ায় ঋণের দায়ে সচল তাঁতও বন্ধ করে দেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছি না। রমজান মাসের শুরুতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও দেশীয় বিপণিবিতানগুলো খোলা রাখলে আমদের এ ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না।
শাড়ি ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান জানান, নিম্নমানের ও সস্তা দামের ভারতীয় চাকচিক্যপূর্ণ শাড়ি দেশীয় বাজারে প্রবেশ করায় আগে থেকেই আমাদের শাড়িগুলো মার খাচ্ছে। তারপর আবার লকডাউনে এখন ব্যবসা লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে। তৃণমূল তাঁতিদের সমস্যা নিয়ে সরকার আলোচনায় না বসলে এক সময় বৃহৎ এই তাঁত শিল্প বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেই সাথে লাখো শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে।
ব্যবসায়ীদের দাবিগুলো হচ্ছেÑ লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত তাঁতিদের প্রণোদনা দেয়া, সুতার দাম কমিয়ে আনা, ভারতীয় শাড়ি আমদানি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া, সহজ শর্তে ও বিনা সুদে ব্যাংক ঋন দেয়া, ঈদ মৌসুমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, শাড়ি ব্যবহারের প্রতি নারীদের উৎসাহ বাড়াতে প্রচার মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেয়া, শাড়ি রফতানিতে নতুন বাজার তৈরি করা, সরকারি-বেসরকারি অফিসে নারীদের শাড়ি পরা বাধ্যতামূলক করা, তাঁতিদের সমস্যা সমাধানে তাদের নিয়ে মাসিক আলোচনা সভা করা। এসব দাবি বাস্তবায়নের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন তাঁত মালিক ও ব্যবসায়ীরা।


আরো সংবাদ



premium cement
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দূত হলেন উসাইন বোল্ট ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৩৭ বাংলাদেশে নতুন করে বাড়ছে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা হিট অ্যালার্ট নিয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের নতুন বার্তা ভান্ডারিয়ায় পিকআপ চাপায় বৃদ্ধ নিহত হোচট খেল লিভারপুল, পিছিয়ে গেল শিরোপা দৌড়ে যোদ্ধাদের দেখতে প্রকাশ্যে এলেন হামাস নেতা সিনওয়ার! ফের পন্থ ঝড়, ঘরের মাঠে গুজরাটকে হারাল দিল্লি ইউক্রেনকে গোপনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র গ্রেফতারের পর যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ আরো বেড়েছে ইউক্রেন যুদ্ধে দুর্নীতি, পুতিনের নির্দেশে গ্রেফতার রুশ উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী! 

সকল