২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

কিশোরগঞ্জে ক্রেতার অভাবে আলুতে পচন

-

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে এব ছর আলুর বাম্পার ফলন হলেও হিমাগার না থাকায় আলুতে পচন ধরছে। অন্য দিকে বাজারে ক্রেতার অভাবে আলুর ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশায় চাষিরা। লোকসানের পাশাপাশি আগামীতে আলু চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন তারা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে হোসেনপুরে ৪৫০ হেক্টর জমিতে প্রায় আট হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৪৬৫ মেট্রিক টন বেশি। হেসেনপুরে কোনো হিমাগার না থাকায় পাশের উপজেলার পাকুন্দিয়ার হিমাগারে সিন্ডকেটের কারণে হোসেনপুরের চাষিদের আলু সংরক্ষণ করা অনেকটা অসম্ভব বিধায় চাষিরা উৎপাদিত আলু নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তা ছাড়া বাজারে ক্রেতার অভাবে আলুর দাম কম থাকায় কৃষকরা উৎপাদিত আলু কম মূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, হোসেনপুর উপজেলাটি ভৌগোলিকভাবে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র ও নরসুন্ধা নদ বেষ্টিত হওয়ায় আলু চাষের জন্য খুবই উপযোগী। পচনশীল এ পুষ্টিকর পণ্যটি মাড়াই মৌসুমের পর সারা বছরই চাহিদা থাকার কারণে ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণের প্রয়োজন হয়। যে জন্য প্রয়োজন হিমাগার, স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হলেও কোনো হিমাগার নেই হোসেনপুরে। তাই আগামী বছরের জন্য বীজ আলুও সংরক্ষণ করতে পারছে না চাষিরা। উন্নত জাত হিসেবে ডায়মন্ড, কারেজ ও এসটারিস আলুর ফলন বেশি হওয়ায় তা অধিক লাভজনক হিসেবে ব্যাপক হারে আবাদ হচ্ছে। যেগুলো এক থেকে দেড় মাসের বেশি সময় কোল্ড স্টোরের বাইরে সংরক্ষণ করা যায় না। তাই আলুতে পচন ধরছে।
সরেজমিন উপজেলার হাজীপুর বাজারের আলু বিক্রেতা সিদলা ইউনিয়নের পুড়াবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আ: কাদির, আ: আজিজ, আ: রাশিদ, সাহেবের চর নয়াপাড়ার আশরাফুলসহ অনেকেই জানান, এ বছর তারা প্রত্যেকেই গড়ে ৪০ কাঠা জমিতে আলু চাষ করে কমপক্ষে তিন লাখ টাকা করে লোকসান গুনেছেন।
ইকবাল হোসেন জানান, তিন ঘণ্টা ধরে আলু নিয়ে বসে আছি কেউ দাম করছে না। রোববার হোসেনপুর বাজারে কথা হয়, বিক্রেতা গিয়াস উদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন, এখনো কয়েক শ’ মণ আলু অবিক্রীত থাকায় আলুতে পচন ধরছে। সাহেবের চর গ্রামের কৃষক বাদল মিয়া আক্ষেপ করে বলেন, আলু পচনের কারণে ফেলে দিতে হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, এ বছর আলুর বাম্পার ফলন হলেও স্থানীয় পর্যায়ে হিমাগার না থাকায় কৃষকরা যথাযথ সুফল পাচ্ছে না। যদি এ উপজেলায় কম করে হলেও ৫০০ মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার একটি হিমাগার থাকতো তবে কৃষকরা আরো অধিক লাভবান হতেন। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাবেয়া পারভেজ বলেন, সরকারিভাবে এ উপজেলায় একটি কোল্ড স্টোরেজ স্থাপনের জন্য মাননীয় সংসদ সদস্য ডা: জাকিয়া নুরের কাছে একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement