২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নাটোরে প্রকাশ্যে ঘুরছে শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যার আসামিরা

-

নাটোরের লালপুরের মোহরকয়া গ্রামে এক শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা মামলার এক মাস পার হলেও এখনো গ্রেফতান হননি ১৪ অভিযুক্তের কেউ। তবে পুলিশ বলছে, এখনো ঘটনার তদন্ত চলছে। এরই মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে লালপুর প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
সূত্র জানায়, বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে নিহত শিক্ষার্থীর পরিবার। তবুও এখন পর্যন্ত অজ্ঞাত কারণে একজন অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করেনি লালপুর থানা পুলিশ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার বিশ্বম্ভরপুর গ্রামের আলা উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে ভাড়ইপাড়া হাফিজিয়া মাদরাসার ছাত্র রুহুল আমিন মিষ্টু (১৪) ছুটিতে দরিদ্র বাবার সহযোগিতার জন্য মধু আহরণের কাজ করত। গত ৯ মার্চ ভোররাতে তার মোবাইলে ফোন করে অজ্ঞাত কেউ মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করার কথা বলে পাশের মোহরকয়া গ্রামে ডেকে নেয়। কিছু সময় পরেই ওই গ্রামের আব্দুল আজিজের বাড়ির সামনের বাবলাগাছের সাথে বেঁধে চুরির অভিযোগে বেধড়ক মারধর করা হয় রুহুল আমিনকে। খবর পেয়ে মা-বাবা ও বড় ভাই রমজান আলী তাকে ছাড়াতে গেলে তাদের উপরেও হামলা করা হয়। বড় ভাইকেও একইভাবে গাছের সাথে বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে মারধর করে জখম করা হয়। পরে গ্রাম পুলিশের সহযোগিতায় দুই ছেলেকে উদ্ধার করে প্রথমে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে একই দিন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে তাকে ভর্তি করা হয়। পরের দিন সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাফেজ রুহুল আমিন মিষ্টু (১৪) মারা যায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মোহরকয়া গ্রামের আমজাদ হোসেন, ইয়াকিন, রাকিব, আয়নাল, মঞ্জু ঘোষ, বাবলু মাওলানা, মলা, আতিকুর, রবি, আলম, ফারুক, শহিদুল ও আব্দুল আজিজসহ ১৪ জনের নামে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। সূত্র জানায়, পুলিশের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে লাশের মাথার ডান পাশে কানের উপরে ও নিচে, বুক, কপাল, দুই হাত-নখসহ পুরোটা কালোশিরা, পিঠে আঘাতের অসংখ্য জখম, কালোশিরা দাগ ছাড়াও তার দুই পা-হাঁটু থেকে আঙুল পর্যন্ত থেঁতলে দেয়ার আলামত মিলেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লালপুর থানার ওসি (তদন্ত) আবু সিদ্দিক বলেন, ঘটনার পর নিহত মাদরাসাছাত্র রুহুল আমিন মিষ্টু, তার বড় ভাই ও বাবার নামে দোকান মালিক প্রথমে একটি চুরির মামলা দিয়েছিল। নিহতের পর তার বাবা মারধর করে হত্যার অভিযোগে আরেকটি মামলা দিয়েছেন। উভয় মামলার তদন্ত চলছে। নিহত ছাত্রের বিরুদ্ধে আগে কখনো কোনো অভিযোগ ও মামলা ছিল না বলে তিনি জানিয়েছেন। নিহতের বড় বোন সাথী খাতুন বলেন, জমিজমার বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে তার ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এলাকার প্রভাবশালী এসব আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের আটক করছে না।


আরো সংবাদ



premium cement