বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটে শায়েস্তাগঞ্জবাসী
- আব্দুর রকিব শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ)
- ০৫ মার্চ ২০২১, ০০:০০
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলাসহ আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় প্রতি বছরই শুষ্ক মৌসুমে এ সঙ্কটে পড়তে হয়। মূলত এ সঙ্কটের সূত্রপাত হয় আজ থেকে প্রায় ১০ বছর আগ থেকে। এ সঙ্কট ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কমে গেছে পুকুরের পানিও।
এখন ফাল্গুন মাস। কাটফাটা রৌদ্রের চৈত্র আসতে ঢের দেরি। কিন্তু পানির সঙ্কট ইতোমধ্যে কঠিন পর্যায়ে পৌঁছেছে। প্রতি বছর নভেম্বর-ডিসেম্বর মাস থেকে সাধারণ টিউবওয়েলের পানির প্রবাহ কমতে থাকে। ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে অগভীর নলকূপগুলোতে আর কোনো পানি ওঠে না। এছাড়া শায়েস্তাগঞ্জে কিছু অঞ্চলে উঁচু টিলার উপরে বাড়ি রয়েছে। এই সঙ্কট তাদের জন্য আরো আগেভাগে দেখা দেয়।
এ সময়ে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নি¤œগামী হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের সাহায্যে গভীর নলকূপের মাধ্যমে ধান চাষসহ অন্যান্য ফসলি জমিতে সেচের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা। শীত মৌসুমে রবিশস্যসহ বিভিন্ন ফসল চাষে প্রচুর পরিমাণে পানি সেচের প্রয়োজন হয়। তাই নদী নালা, খাল, বিল, পুকুরসহ অন্য সব জলাধারই পানিশূন্য হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়েই ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে চাষাবাদ করা হয়।
এ পানি সঙ্কট বিষয়ে পৌর এলাকার বাসিন্দা তাফহিম চৌধুরী বলেন, বাড়ির নলকূপে ইতোমধ্যেই পানি বন্ধ হয়ে গেছে। দাউদনগর গ্রামের জুনায়েদ চৌধুরী বলেন, আমার বাড়িতে ২৮০ ফুট গভীর টিউবওয়েল। তারপরেও পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ১৫ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি মোটর সংযোগের মাধ্যমে আপাতত পানির অভাব পূরণ করছি। মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে যদি বৃষ্টিপাত না হয় সঙ্কট আরো বৃদ্ধি পাবে।
বাগুনিপাড়া গ্রামের আলেয়া বেগম বলেন, টিউবওয়েলে এখন আর পানি পাই না তাই অন্য বাড়ি থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হয়। উপজেলার নুরপুর ইউনিয়নের রোকেয়া বেগম বলেন, আমাদের টিওবওয়েলে বেশ কিছুদিন ধরে পানি দিচ্ছে না, আমরাও অন্য বাড়ি থেকে খাবার পানি এনে খাচ্ছি।
এ ধারা অব্যাহত থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে পানি সঙ্কট আরো তীব্র আকার ধারণ করবে। তাই ভিন্ন কোনো উপায় বা সঙ্কট সমাধানের উপায় খুঁজে বের করা এখন প্রথম কাজ। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক গভীর নলকূপ স্থাপনের মাধ্যমে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার পানি সঙ্কট দূর করা সম্ভব বলে মনে করেন সচেতন মহল।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল কবির ভূইয়া বলেন, আমি সরেজমিন বিষয়টি দেখে এসেছি। সেচ কাজে ও বিভিন্ন সময় পাম্প দিয়ে অতিরিক্ত পানি তোলার কারণে পানির স্তর নিচে চলে আসে। সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন প্রজেক্ট হাতে নিয়ে কাজ করছি। পানির ব্যবস্থা করছি। এ ছাড়াও তারা পাম্প নলকূপ করে দিচ্ছি। তারা নলকূপের মাধ্যমে ওয়াটার লেভেল ৪০ ফুট নিচে চলে গেলেও পানি আসে। আমাদের হাতে আরো কয়েকটি প্রজেক্ট রয়েছে, সেগুলো করতে পারলে আশা করছি পানির সমস্যা দূর হবে।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিনহাজুল ইসলাম বলেন, এ সময় সব এলাকাতেই পানির স্তর নিচে নেমে যায়। উপজেলা থেকে ইতোমধ্যে ৭৮টি নলকূপ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এতে কিছুটা হলেও মানুষের কষ্ট লাগব হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা