১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চিত্রা নদী ও হক ক্যানেলে ২ শতাধিক বর্জ্যলাইন

বিফলে যাচ্ছে ২৫৫ কোটি টাকার খননকাজ
চিতলমারীতে খননকৃত চিত্রা নদীতে এখনও রয়েছে পয়ঃবর্জ্যরে পাইপলাইন ও ট্যাংকি : নয়া দিগন্ত -

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা সদরের পাশ দিয়ে বহমান মরা চিত্রা নদী ও হক ক্যানেলের দুই পাড়ে দুই শতাধিক পয়ঃবর্জ্য ও নর্দমার লাইন রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় এ নদী ও ক্যানেলটির খনন কাজ চললেও পয়ঃবর্জ্য ও নর্দমা অপসারণের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এতে ২৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ খনন প্রকল্পের উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে বলে পরিবেশবিদরা মনে করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ২০১৯ সালের শেষের দিকে তিনটি নদী ও ৫৫ টি খালের খনন কাজ শুরু হয়। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫৫ কোটি টাকা। বেশির ভাগ খাল ও নদী খনন শেষ হলেও বর্তমানে চিতলমারী উপজেলা সদরের পাশ দিয়ে বহমান মরা চিত্রা নদী ও হক ক্যানেলের খনন কাজ চলছে। কিন্তু শুধু উপজেলা সদরের দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মরা চিত্রা নদী ও হক ক্যানেলের দুই পাড়ে দুই শতাধিক পয়ঃবর্জ্য ও নর্দমার লাইন রয়েছে; যা ভয়াবহভাবে পরিবেশ দূষণ ঘটাচ্ছে। খাল খননের সাথে সাথে ওই সব পয়ঃবর্জ্য ও নর্দমার পাইপ ও ড্রেন লাইন অপসারণ না করায় নদী ও ক্যানেলের দুই পাড়ের বাসিন্দারা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
চিত্রা পাড়ের বাসিন্দা সুবল কর্মকার, মরু দুলাল বিশ্বাস, গৌরাঙ্গ বিশ্বাস, রূপালী বেগম, গাউছ গাজীসহ অনেকে জানান, খাল খননের শুরুতে তারা প্রাণের স্পন্দন দেখতে পেয়েছিলেন। কিন্তু পয়ঃবর্জ্য ও নর্দমার পাইপ এবং ড্রেন লাইন অপসারণ বা বন্ধ না করায় হতাশ হয়ে পড়েছেন। কারণ দূষিত পানির এসব লাইন থাকলে নদী-খালের পানি আর ব্যবহার যোগ্য থাকছে না। এ ছাড়া অনেকে তাদের যাবতীয় ময়লা আবর্জনা এ খালে ফেলছে। তাদেরও কেউ বাধা দেয়ার নেই।
স্কুলশিক্ষক সাফায়েত হোসেন ও সাংবাদিক দেবাশিষ বিশ্বাস জানান, এগুলো অপসারণ ও বন্ধে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া দরকার। এ উপজেলার মানুষের সীমাহীন পানির কষ্ট রয়েছে। তা ছাড়া যারা পরিবেশ দূষণ করছে তারা অপরাধ করছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) খুলনা বিভাগীয় কার্যনির্বাহী সদস্য এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পরিবেশ অধিদফতরের উদাসীনতার কারণে এ জাতীয় পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড চলছে; যে কারণে পরিবেশ প্রতিবেশ চরম হুমকির মুখে। অবিলম্বে এসব কর্মকাণ্ড বন্ধের জন্য কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে সরকারের ২৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ খনন প্রকল্পের মহতি উদ্যোগ বিফলে যাবে।
এ ব্যাপারে জানতে বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তাকে বারবার ফোন দিলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। তবে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফুল আলম বলেন, পরিবেশকে হুমকির মুখে ফেলার মতো কাজ যে কাউকে মর্মাহত করে। যারা এ ধরনের কাজের সাথে জড়িত তাদের নদী ও খাল দূষণ না করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। না হলে আমরা পরিবেশ দূষণ আইনে ব্যবস্থা নেবো।


আরো সংবাদ



premium cement