২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তাড়াশে অটোরিকশায় এলপি গ্যাসের ব্যবহারে ঝুঁকি বাড়ছে

-

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে চরম ঝুঁকি নিয়ে চলছে সিএনজিচালিত তিন চাকার অটোরিকশা। তাতে অবাধে ব্যবহৃত হচ্ছে এলপি গ্যাস। ক্রমাগত গ্যাস সঙ্কট আর সিএনজি ফিলিং স্টেশনের লম্বা লাইন এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এ পথ বেছে নিয়েছেন অনেক চালক। এতে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের মতো বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন সাধারণ মানুষ।
বিস্ফোরক পরিদফতর সূত্র জানায়, সরকারি বিধিতে ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপণ সক্ষমতাসংক্রান্ত লাইলেন্সসহ অগ্নিনির্বাপণ সিলিন্ডার এবং মজবুত ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার থাকার কথা বলা হয়েছে। সরেজমিন বিভিন্ন সিএনজি অটোরিকশার স্ট্যান্ড ঘুরে দেখা যায়, চালকের সিটের নিচে এবং যাত্রীর সিটের পেছনে ক্যারিয়ারে উন্মুক্তভাবে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার রাখা হয়েছে। এ-জাতীয় পরিবহনে সিএনজি সিলিন্ডার ব্যবহারের অনুমতি থাকলেও এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের অনুমতি নেই।
সূত্র জানায়, রান্নার কাজে ব্যবহৃত এলপিজিতে থাকে মূলত প্রোপেন বা বুটেন। সহজে বাতাসে মিশতে চায় না এই গ্যাস। তার ওপর সামান্য বাতাসের সংস্পর্শে এই গ্যাস জ্বলতে সক্ষম। অনেক সময় উঁচু-নিচু রাস্তায় ঝাঁকির কারণে সিলিন্ডারের মুখে ব্যবহৃত রেগুলেটরও মিসিং হতে পারে। সিলিন্ডারের মুখের রেগুলেটর মিসিং হলে গ্যাস লিকেজ হয়ে অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কা খুবই বেশি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, অটোরিকশার সিলিন্ডার প্রকারভেদে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকায় কিনতে হয়। এতে গ্যাস রি-ফিলিং করলে এক-চতুর্থাংশ বাতাস থাকলেও সিলিন্ডারটি নিরাপদ থাকে। এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ৭৫০ টাকায়ই কেনা যায়। তাতে বাতাসের পরিমাণ থাকে না। কিন্তু সিলিন্ডার কোনোক্রমেই নিরাপদ নয়। এলপি গ্যাস সহজলভ্যতার কারণেই এর ব্যবহার দিন দিন বেড়ে চলছে আর যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকিও বাড়ছে।
উপজেলা শহর থেকে জেলা শহরের গ্যাস পাম্পের দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার। এসব স্ট্যান্ড থেকে দৈনিক প্রায় ৪০০ অটোরিকশা বিভিন্ন সড়কে যাত্রী পরিবহন করে। তাড়াশ থেকে মহাসড়ক হয়ে সেই পাম্প স্টেশনে গিয়ে সিএনজির সিলিন্ডারে গ্যাস ভরতে হয়।
একাধিক সিএনজি চালক জানান, গ্যাসের সিলিন্ডার ভরতে বগুড়ায় ও সিরাজগঞ্জে যাতায়াত করতে হয় মহাসড়ক দিয়ে। সেখানে পুলিশের হয়রানির পাশাপাশি নামে-বেনামে বিভিন্ন সংগঠনকে চাঁদা দিতে হয়। বাধ্য হয়ে তারা বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত এলপি গ্যাস দিয়েই গাড়ি চালাচ্ছেন।
রাজশাহী বিভাগীয় বিস্ফোরক পরিদর্শক ড. আসাদুল ইসলাম বলেন, যাদের নামে অনুমোদন আছে তারাই শুধু এলপি গ্যাস সিলিন্ডার, পেট্রলসহ দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করতে পারবেন। অনুমোদন ছাড়া যারা অবৈধভাবে এসব গ্যাস ব্যবহার করবে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাউল করিম বলেন, আপনার কাছেই প্রথম জানলাম। বিষয়টি মোবাইল কোর্টের আওতাভুক্ত আছে কি না খতিয়ে দেখে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement