২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মেহেরপুরে গরুর ক্ষুরা রোগে দিশেহারা খামারিরা

-

মেহেরপুর জেলাজুড়ে গরুর ক্ষুরা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, যে বাড়ি বা খামারে এ রোগের দেখা দিচ্ছে সে বাড়ি বা খামারের সব গরু আক্রান্ত হচ্ছে। একই সাথে ছাগলের মধ্যেও এ রোগের প্রকোপ বেড়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন খামারে অসংখ্য গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে খামারিদের।
গাংনী উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের তোহিদুল ইসলাম জানান, তিনি প্রায় দুই লাখ টাকায় ফ্রিজিয়ান জাতের তিনটি গরু কিনে মোটা তাজা করছিলেন। হঠাৎ করে একটি গরু জ্বরে আক্রান্ত হয়। পরদিন ক্ষুরা রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। গরুগুলোর মুখের ভেতরে ঘা হয়ে মুখ থেকে ফেনাযুক্ত লালা ঝরছে। খাওয়া-দাওয়া বন্ধ। একইভাবে পায়ের খুরের মাঝেও ঘা দেখা দেয়। এর কয়েকদিনের মধ্যে অন্য দু’টিও আক্রান্ত হয়। গ্রাম্য ডাক্তারের চিকিৎসায় একটি গরু ভালো না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত জবাই করে গোশত বিক্রি করে দিয়েছেন। অন্য দু’টি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেছে। তিনটি গরুর চিকিৎসা করতে তার প্রায় ছয় হাজার টাকা খরচ হয়েছে। একই গ্রামের হামিদুল ইসলাম জানান, তার তিনটি গরুর তিনটিই আক্রান্ত হয়েছে। তবে ঘরোয়াভাবে চিকিৎসা দিয়ে মোটামুটি সুস্থ হয়েছে। একইভাবে ওই এলাকার যে যে বাড়িতে গরু রয়েছে তার প্রায় সব বাড়িতেই ক্ষুরা রোগ দেখা দিয়েছে।
উপজেলার বানিয়াপুকুর গ্রামের খামারি শাজাহান জানান, তার খামারে ৫১টি গরু রয়েছে। যার মধ্যে ৩০টি গরু ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়। প্রাণি সম্পদ দফতরে কোনো টিকা না থাকায় বাইরে থেকে কিনে টিকা দিয়েছেন। প্রাণিসম্পদ দফতর থেকে তেমন কোনো সেবা পাওয়া যায় না বলে তিনি জানিয়েছেন।
সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামের গ্রাম্য ডাক্তার শরিফুল ইসলাম জানান, সব এলাকায় রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে খুবই খারাপ অবস্থা। একটি গরুর চিকিৎসা দিতে গিয়ে কৃষককে এক থেকে দুই হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে। একেবারে শুরুতেই চিকিৎসা দিতে পারলে কয়েকদিনের মধ্যে সুস্থ হচ্ছে। আবার অনেক গরুর সুস্থ হতে বেশ সময় লাগছে। তিনি আরো জানান, শুধু উজলপুর গ্রামেই অন্তত ১০টি গরু মারা গেছে।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত গরু-ছাগল ঠিকমতো হাঁটতে না পারায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। আবার হাসপাতালের ডাক্তারদেরও ঠিকমতো পাওয়া যায় না। এলাকায় এসে চিকিৎসা দিলে তাদের মোটা অঙ্কের ভিজিট দিতে হয়। ওষুধও ঠিকমতো পাওয়া যায় না তাদের কাছে।
মেহেরপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম জানান, মেহেরপুর জেলা হচ্ছে ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা। অনেকেই ভারত থেকে বিভিন্নভাবে গরু নিয়ে আসে। ভারত থেকে আসা গরুগুলো প্রায়ই অসুস্থ দেখা যায়। মূলত ভারতীয় গরু থেকেই মেহেরপুরে ক্ষুরারোগের বিস্তার ঘটেছে। বাছুর গরুর মধ্যে এ রোগ বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। আক্রান্তের হার খুব বেশি নয়। ওষুধের কোনো সংকট নেই। চিকিৎসাসেবাও দেয়া হচ্ছে ঠিকমতো। তিনি আরো জানান, বর্তমানে মেহেরপুর জেলার তিন উপজেলায় কোনো ভেটেরিনারি সার্জন নেই। জেলায় প্রকল্পের অধীন মোট পাঁচজন ডিপ্লোমা চিকিৎসক রয়েছেন। তাদের মাধ্যমেই চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement
থামছে না পুঁজিবাজারে পতন বিনিয়োগকারীদের আর্তনাদ ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভোট শুরু: নাগাল্যান্ডে ভোটার উপস্থিতি প্রায় শূন্য কারাগার এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপির হাল ধরার কেউ নেই : ওবায়দুল কাদের পাবনায় ভারতীয় চিনি বোঝাই ১২টি ট্রাকসহ ২৩ জন আটক স্বচ্ছতার সাথে সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী মিয়ানমার বিজিপির আরো ১৩ সদস্য পালিয়ে এলো বাংলাদেশে শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক মন্দিরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ তুলে ২ ভাইকে হত্যা ইরানে ইসরাইলি হামলার খবরে বাড়ল তেল সোনার দাম যতই বাধা আসুক ইকামাতে দ্বীনের কাজ চালিয়ে যাবো : ডা: শফিকুর রহমান

সকল