১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পলাশ অ্যাগ্রো ইরিগেশন প্রকল্পে পানিপ্রবাহ ও লক্ষ্যমাত্রা পূরণে শঙ্কা

আশুগঞ্জ-পলাশ অ্যাগ্রো ইরিগেশন সেচ প্রকল্প : নয়া দিগন্ত -

৬৬ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বিএসিডিসির তত্ত্বাবধানে আশুগঞ্জ-পলাশ অ্যাগ্রো ইরিগেশন সেচ প্রকল্পের চলতি বছরের সেচের পানি অবমুক্ত করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনের অভ্যন্তরে ইনটেক পয়েন্ট প্রধান স্লুইস গেট খুলে দিয়ে এ পানি অবমুক্ত করা হয়। সেচের পানি অবমুক্ত করা হলেও প্রকল্পের পানি সঞ্চালন খাল আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন সড়ক প্রকল্পের বালু দিয়ে ভরাট করায় বোরো মৌসুমে সেচকাজ ও ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
আশুগঞ্জ-পলাশ অ্যাগ্রো ইরিগেশন সেচ প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৫ সালে ব্যক্তি উদ্যোগে এবং ১৯৭৮-৭৯ অর্থবছর থেকে বিএডিসির তত্ত্বাবধানে আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রের বর্জ্যপানি রেগুলেটরের মাধ্যমে গতিপথ পরিবর্তন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ, সরাইল, নবীনগর এবং সদর উপজেলার প্রায় ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে নামমাত্র মূল্যে সেচসুবিধা দেয়া হয়। এ প্রকল্পে শুরুতেই সেচের পানি ধরে রাখতে ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্গত গরম পানি ঠাণ্ডা করতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ রেলগেট এলাকায় বিদ্যুৎ বিভাগের এই পুকুরকে পানির প্রধান কুলিং রিজার্ভার হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে আসছে।
তবে কিছুদিন আগে কাউকেই কিছু না জানিয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সেচ প্রকল্পের কুলিং রিজার্ভার পুকুরটি ভরাট করে ফেলেছে। এরই মধ্যে চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু হয়েছে আশুগঞ্জ নদীবন্দর-আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত চার লেন সড়ক উন্নয়নের কাজ। এতে সেচ প্রকল্পের অবশিষ্ট রির্জাভার পুকুর ও আশুগঞ্জ-সরাইল বিশ্বরোড পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ঘেঁষে এ প্রকল্পের প্রায় ১১ কিলোমিটার ড্রেন ও খাল ভরাট করতে হবে। এতে প্রকল্পের সেচসুবিধা পুরোপুরি বন্ধ বা বিঘিœত হতে চলছে। এসবের কারণে প্রকল্পের প্রায় ৩৪ হাজার সুবিধাভোগী কৃষক সেচসুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।
তবে চার লেন প্রকল্প কর্তৃপক্ষের দাবি, সেচব্যবস্থা অব্যাহত রেখেই কাজ করা হচ্ছে। তবে চলতি ইরিবোরো মৌসুমে শুরু হলেও সরানো হয়নি ভরাটকৃত বালু। তা ছাড়া ফোর লেন প্রকল্পের কাজেও ড্রেন ও খাল ভরাট শুরু করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন সুবিধাভোগী কৃষকরা। এরই মধ্যে খাল থেকে কিছুটা বালু সরিয়ে শুক্রবার সকালে ইনটেক পয়েন্ট প্রধান স্লুইস গেট খুলে দিয়ে এ পানি অবমুক্ত করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, আশুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সি, বিএডিসির ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল করিম, আশুগঞ্জ ইউএনও অরবিন্দ বিশ্বাস, সরাইল ইউএনও আরিফুল হক মৃদুল, নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক ওবায়েদ হোসেন, সহকারী প্রকৌশলী খলিলুর রহমান প্রমুখ।
প্রকল্প পরিচালক ওবায়েদ হোসেন বলেন, এই পানি ব্যবহারের কারণে ফসলের উৎপাদনও ভালো হয়। তবে খাল ভরাট করায় ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা ছিল। ইতোমধ্যে খালের বালু সরিয়ে পানি নির্বিঘ্নে চলাচলের উপযোগী করে পানি অবমুক্ত করা হয়েছে।
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল করিম বলেন, চলতি ইরিবোরে মৌসুমি কৃষকদের পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা জন্য পানি অবমুক্ত করা হয়েছে। কোথায় পানি চলাচলে বাধা সৃষ্টি হলে পানি চলাচল নিশ্চিত করা হবে। এই বিষয়ে সবাই আন্তরিক।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল