১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সিঙ্গাইরে ধলেশ্বরীতে অপরিকল্পিত খনন : বিলীন কৃষিজমি

সিঙ্গাইরে ধলেশ্বরী নদী খননের নামে নদী তীরবর্তী কৃষিজমির মাটি কাটা হচ্ছে : নয়া দিগন্ত -

ছোট নদী, খাল, জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের (প্রথম পর্যায়) আওতায় মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার বায়রা ও তালেবপুর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ধলেশ্বরী নদীর সাড়ে আট কিলোমিটারের অধিক পুনঃখনন শুরু হয় অনিয়মের মধ্য দিয়ে। ১৬টি প্যাকেজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কখনো দেশীয় ড্রেজার আবার কখনো ভেকু দিয়ে নদী খননের কাজ শুরু করে।
সরেজমিন দেখা যায়, অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার বসিয়ে মাটি কাটায় গোলড়া এলাকার উত্তর-পশ্চিম তীরের ফসলি জমি ভেঙে পড়া শুরু হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, বিষয়টি নজরে আসায় উপজেলা প্রশাসন ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটা বন্ধ করে দিয়েছে। কাশিমনগর গ্রামের মুফতি আব্বাস উদ্দিন বলেন, ভাঙনের কবল থেকে নদীতীরবর্তী আমার জমি রক্ষা করতে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। বিনোদপুর গ্রামের সোহরাব হোসেন বলেন, সিএস রেকর্ড অনুযায়ী নদী খননের কথা থাকলেও এখানে সেটা মানা হচ্ছে না।
কাশিমনগর ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নদীটির প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকা পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে। বর্ষার পানি নেমে যাওয়ায় ওই স্থানগুলোতে চলছে ভেকু দিয়ে মাটি কাটার কাজ।
হায়দার এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান রসিদের মাধ্যমে প্রতিদিন শত শত ট্রলি মাটি বিক্রি করছে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে দায়িত্বে থাকা রিপন হোসেন জানান, নিলামপ্রাপ্ত ব্যক্তির কাছ থেকে কিনে খননকৃত মাটির মূল্যসহ ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে বৈধভাবে বিক্রি করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ জুলাই নিলামের মাধ্যমে আমজাদ হোসেন, আবু নঈন বাশার, দেওয়ান মাহবুবুল আলম ও আবুল কালাম আজাদ দুই কোটি ১১ লাখ ঘনফুট বালু ড্যাম্পিং স্পটের ও নদী খননকৃত মাটি সরবরাহের অনুমতি পায়। এ সুযোগে নিলামপ্রাপ্ত ব্যক্তির বাইরে একাধিক প্রতিষ্ঠান অবাধে মাটি কেটে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ ওঠে।
মাটি বিক্রির সাথে জড়িতরা জানান, নিলামপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে কিনে নিয়ে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে এসব মাটি সবই খননকৃত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিলামপ্রাপ্ত একাধিক ব্যক্তি জানান, আমরা নিলামপ্রাপ্ত হলেও ক্ষমতাসীন স্থানীয় প্রভাবশালীরা এটা নিয়ন্ত্রণ করছেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহের নিগার সুলতানা বলেন, বিষয়টি সরেজমিন দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে সিঙ্গাইর উপজেলা পানিসম্পদ উন্নয়ন এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও রুনা লায়লা বলেন, কৃষিজমি রক্ষার্থে ও ভাঙন রোধে ড্রেজার দিয়ে নদীতীরবর্তী খননকাজ বন্ধ করা হয়েছে। নিলামকৃত মাটি ভেকু দিয়ে কেটে নিতে বাধা নেই। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় ইউনিয়ন কমিটির উপস্থিতিতে লাল নিশানের বাইরে থেকে মাটি কেটে নেয়ার সুযোগ নেই।


আরো সংবাদ



premium cement