ঘিওরে ভূমিদস্যুরা কাটছে টপসয়েল কৃষি উৎপাদনে বিপর্যয়
- আবদুর রাজ্জাক ঘিওর (মানিকগঞ্জ)
- ০১ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০
মানিকগঞ্জের ঘিওরে চিহ্নিহ্নত ভূমিদস্যুদের দাপটে অসহায় হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। জোরপূর্বক ফসলি জমির ওপর দিয়ে ফসল নষ্ট করে ট্রাক চলাচল করাচ্ছে তারা। ভূমিদস্যুদের দাপটে মামলা-হামলার ভয়ে কেউ কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না। সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও কার্যকরী আইনের তোয়াক্কা না করেই ওই সব জমির মাটি কেটে ৮-১০ ফুট গভীর গর্ত করে ফেলা হচ্ছে। এতে ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে আশপাশের জমি। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমির টপসয়েল।
সেই সাথে উপজেলার আবাদি জমিতে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে পুকুর খনন। জোতদার কৃষক থেকে শুরু করে প্রান্তিক কৃষকরাও ঝুঁকছেন পুকুর তৈরির দিকে। একের পর এক খনন করা পুকুরে গিলে খাচ্ছে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। এতে পরিবেশ ভারসাম্য নষ্টের পাশাপাশি শস্য উৎপাদন হ্রাসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা স্থানীয় প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মচারীর সহযোগিতায় এভাবে মাটি বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। এমনকি এ বিষয়ে এলাকাবাসীর কোনো অভিযোগ আমলে নিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন। এমন অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের। ফলে কোনো সুফল পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী কৃষকরা।
সম্প্রতি সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, সরকারি নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পুরাতন ধলেশ্বরী, ইছামতি নদী ও ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি ও পুকুর তৈরি করছে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতারা। ধলেশ্বরী নদীর ঘিওর সদরের কুস্তা শ্মশান ঘাট এলাকায় রাতের আঁধারে মাটি কেটে অবাধে বিক্রি করা হচ্ছে। পয়লা ইউনিয়নের বাইলজুরি পশ্চিম পাশে ধলেশ্বরী নদীতে ও পয়লা বিলে ফসলি জমি কেটে পুকুর তৈরি করছেন মাটি ব্যবসায়ী আরশেদ আলী, শরিফ ও আরিফ। তারা প্রতিদিন প্রকাশ্যে মাটি কেটে বিক্রি করছেন। বড়টিয়া ইউনিয়নের করজনা এলাকার পুলিশ সদস্য খন্দকার ইদ্রিস পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ইছামতি নদী খনননের জমাকৃত মাটি ভেকু দিয়ে কেটে তাদের জমি ভরাট করছে। কেটে নেয়া এসব মাটির বেশির ভাগ যাচ্ছে ভিটে বাড়ি ভরাটে। ক্ষতি হচ্ছে চলাচলের রাস্তা-ঘাট ও ফসলি জমির।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা বারবার নিষেধ করলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। মহামারী করোনা ভাইরাস ও দ্বিতীয় দফায় বর্ষার পানির কারণে ফসল আবাদ করতে দেরি হওয়ায় ক্ষতি হচ্ছে কৃষকদের। প্রায় এক মাস ধরে প্রকাশ্যে দিনের বেলায় ভেকু দিয়ে মাটি কাটা হলেও কার্যকর কোনো ভূমিকা পালন করছে না স্থানীয় প্রশাসনÑ এমন অভিযোগ কৃষকদের।
এ ব্যাপারে একাধিক ভেকু ও অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীরা না প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা উপজেলা প্রশাসন, সরকারি দলীয় নেতা ও সাংবাদিকদের ম্যানেজ করেই মাটি কাটছি।
ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আইরিন আক্তার জানান, তাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। দ্রুতই ভূমিদস্যু ও অবৈধ মাটি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা