২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হোসেনপুরে গবাদিপশুর লাম্পিস্কিন দিশেহারা কৃষক ও খামারি

-

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে গবাদিপশুর লাম্পিস্কিন ডিজিজে আক্রান্ত হচ্ছে। স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করেও আশানুরূপ প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। খামারি ও পশুর মালিকরা এ রোগ থেকে তাদের গবাদিপশুকে বাঁচাতে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। ফলে ভুক্তভোগীরা বিনামূল্যে টিকা প্রদান ও চিকিৎসা পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করে জরুরি প্রতিকার দাবি করেছেন।
সরেজমিন তথ্য সংগ্রহকালে, স্থানীয় পৌর এলাকার ঢেকিয়া গ্রামের আল-আমিন জানান, তার প্রায় ৬০ হাজার টাকার ষাঁড়ের পুরো দেহে হঠাৎ গুটি গুটি হলে ষাঁড়টি খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে ক্রমে ওজন কমতে থাকে। পরে স্থানীয় পশু চিকিৎকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করেও কাজ না হওয়ায় ৩৭ হাজার টাকায় ষাঁড়টি কসাইয়ের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। প্রতিদিনই এ রকম আক্রান্ত গবাদি পশুকে খামারি ও পারিবারিকভাবে লালন-পালনকারীরা চিকিৎসার জন্য উপজেলা পশু চিকিৎসালয়ে নিয়ে আসছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: আবদুল মান্নান জানান, গত নভেম্বর থেকে অদ্যাবধি চার শতাধিক পশু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। গবাদিপশুর লাম্পিস্কিন ডিজিজ একটি ভাইরাসজনিত চর্মরোগ যা শুধু গরু ও মহিষকে আক্রান্ত করে। বাংলাদেশে এ রোগটি নতুনভাবে আবির্ভূত হয়েছে। যা মশা, মাছি, আঠালি (গরুর শরীরের উঁকুন), ব্যবহৃত নিডল ও সিরিঞ্জ দিয়ে এ রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ রোগে আক্রান্ত গবাদিপশুর প্রাথমিকভাবে চামড়ার নিচে অসংখ্য গুটির সৃষ্টি হয় যা পোচকা হয়ে পচন ধরে চামড়ার গুণাগুণ নষ্ট করে দেয়। এতে গরু দুর্বল হয়ে ওজন কমতে থাকে ও দুধ উৎপাদন কমে যায়।
তিনি জানান, লাম্পি স্কিন থেকে বাঁচানোর জন্য গবাদি পশুকে মশা, মাছি মুক্ত রাখার জন্য খামার ও বসতবাড়ির আশপাশ পরিচ্ছন্ন রাখা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, আক্রান্ত গবাদি পশু থেকে সুস্থ গবাদি পশুকে দূরে রাখতে হবে। সম্ভব হলে মশারির ভেতরে রাখা ও সর্বোপরি ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা দিতে হবে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত এক হাজারের বেশি গবাদি পশুকে সরকারিভাবে টিকা দেয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে আরো পাঁচ শত গবাদি পশুর জন্য টিকা বরাদ্দ হয়েছে যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই স্বল্প।
উপজেলা ভেটেনারি সার্জন ডা: লুৎফর রহমান জানান, টিকার স্বল্পতার কারণে বড় বড় খামারিরা যাতে আগ্রহ না হারায় সেজন্য প্রাথমিকভাবে উপজেলার ৩১টি নিবন্ধিত খামারির গবাদি পশুকে সরকারিভাবে গুড ফ্রক্স টিকা দেয়া হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement