২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চুয়াডাঙ্গায় কালো তালিকাভুক্ত হচ্ছেন চুক্তি ভঙ্গকারী মিলাররা

-

চুয়াডাঙ্গায় কালো তালিকাভুক্ত হচ্ছেন ধান ও চাল সরবরাহে চুক্তিভঙ্গকারী মিলাররা। এ দিকে বোরো মৌসুমে সংগ্রহে সময় বৃদ্ধি করেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। গুদামের দাম কম থাকায় এমনটি হয়েছে।
জানা যায়, ১৫ দিন সময় বৃদ্ধি করেও লক্ষ্যমাত্রার ৩৩ দশমিক ৬ শতাংশ ধান এবং ৭৭ দশমিক ১৯ শতাংশ চাল সংগ্রহ হয়েছে। খাদ্য বিভাগ এ ব্যর্থতার জন্য চুক্তিভুক্ত মিলারদের দায়ী করে যারা একেবারেই চাল সরবরাহ করেননি, তাদেরকে ইতোমধ্যেই কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। এসব মিলারকে কালো তালিকাভুক্ত করা হতে পারে। আর মিলাররা বলছেন, বাজারদর বেশি হওয়ায় এরকম হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি এবং সরকারিভাবে ঘোষিত ধান এবং চালের মূল্য খোলাবাজার থেকে কম হওয়ায় সংগ্রহে বড় ধাক্কা লেগেছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অফিস সূত্র জানায়, ধানের সরকারি রেট ২৬ টাকায় ৫ হাজার ৩১০ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৭৫৬ মেট্রিক টন। চালের সরকারি রেট ৩৬ টাকায় ৭ হাজার ৬০৫ মেট্রিক টন সিদ্ধ ও আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। অর্জন হয়েছে ৫ হাজার ৮৭১ মেট্রিক টন, যা শতকরা ৭৮ ভাগের কাছাকাছি। এ সরবরাহের সময় ছিল প্রথমে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় শেষে ধান ও চাল সংগ্রহ সন্তোষজনক না হওয়ায় ১৫ দিন অতিরিক্ত সময় বাড়ায় কর্তৃপক্ষ।
এ মৌসুমে চুক্তিবদ্ধ মিলার ছিলেন ১৯৭ জন। তাদের মধ্যে ১২১ জন মিলার চুক্তি অনুযায়ী চাল সরবরাহ করেছেন। আংশিক পরিমাণ চাল সরবরাহ করেছেন ৫২ জন মিলার। একেবারেই চাল সরবরাহ করেননি ৩৪ জন মিল মালিক। আগামী ৩১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সঠিক কারণ দেখাতে না পারলে ৫২ জন মিলারকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।
গুদামে ধান সরবরাহ না করার বিষয়ে কৃষকরা জানান, সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রয়ে বিভিন্ন বিড়ম্বনা রয়েছে। গুদামে প্রথমে নমুনা জমা দিতে হয়। তারপর কর্মকর্তারা নমুনা দেখে ধান নেবেন কি নেবেন না, সেটি নিশ্চিত করেন। চলতি মৌসুমে করোনা পরিস্থিতির কারণে সড়কে যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া থাকায় অনেক কৃষক কয়েক দফায় খাদ্য বিভাগে যোগাযোগকে বিরক্তিকর মনে করেছেন। এ জন্য তারা গ্রামের ফড়িয়া অথবা মিল মালিকদের কাছে ধান দিয়েছেন। এ ছাড়া সরকারি দাম থেকে বাজারের দাম বেশি হওয়ায় গুদামে ধান দিতে আগ্রহী হয়নি কৃষকরা।
জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল্লাহ শেখ বলেন, বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় আশানুরূপ ধান কিনতে পারেননি চালকল মালিকেরা। আবার সরকারি দামের চেয়ে বাজারে চালের দাম বেশি। সে ক্ষেত্রে ধান কিনে গুদামে চাল দিতে বড় লোকসান হবে। আমি নিজেও লোকসান করে চাল সরবরাহ করেছি যেন লাইসেন্স বাতিল না হয়।
খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেজাউল ইসলাম বলেন, এ বছর করোনায় স্থানীয় বাজারে ধানের দাম বেশি ছিল। ফলে কৃষকরা উৎসাহ দেখাননি। তাই এ বছর ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। তবে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অনেকটাই কাছাকাছি গেছে। তাগাদা দিয়েও একেবারেই যারা চাল সরবরাহ করেনি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement