২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মেঘনায় শত শত বসতভিটা বিলীন হুমকিতে কয়েক গ্রাম

অবৈধ বালু উত্তোলন
-

নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চলে মেঘনার অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে শত শত ঘরবাড়ি। হুমকির মুখে পড়েছে গ্রামের পর গ্রাম। আর মানবেতর জীবনযাপন করছেন ভাঙনে ঘরবাড়ি হারানো মানুষ। মেঘনায় যত্রতত্র ড্রেজার বসিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীভাঙনের সৃষ্টি হলেও স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারি নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এসব অঞ্চলে গত কয়েক বছরে বিলীন হয়েছে খেটে খাওয়া মানুষের সহায়-সম্বল।
অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে রায়পুরা উপজেলার মেঘনার ভাঙন ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ইতোমধ্যেই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে কয়েকটি গ্রাম। নতুন করে হুমকির মুখে রয়েছে উপজেলার পাড়াতলী ইউনিয়নের কাচারিকান্দি, মজিদপুর, মনিপুর গ্রাম ও মির্জাচর ইউনিয়নের মির্জাচর বাজার। একই কারণে হুমকির মুখে রয়েছে পাশের জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীপুর ইউনিয়নের চরলাপাঙ্গ, বড়িকান্দিসহ বেশ ক’টি গ্রামের শত শত বাড়িঘর এবং গাছপালাসহ ফসলি জমি। দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ বালু উত্তোলনে অব্যাহত নদীভাঙনের ফলে বসতভিটা ও ফসলি জমি হারিয়ে অনেকটা মানবেতর জীবনযাপন করছেন এসব এলাকার মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, চাঁনপুর ইউনিয়নের পূর্ব হোসেননগর মৌজায় চলতি বাংলা সালের জন্য জয়বাংলা ট্রেডার্স নামের প্রতিষ্ঠানকে বালুমহাল ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন। অভিযোগ রয়েছে বালু মহালের ইজারাদাররা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নির্ধারিত স্থান থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে পাড়াতলী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে মেঘনার তীরবর্তী এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করছে। এ কারণে দেখা দিয়েছে ভাঙন।
নদীতে বসতভিটা ও ফসলি জমি হারানো সালাহ উদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন ধরেই প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাথে নিয়ে অবৈধভাবে নির্ধারিত স্থান ব্যতীত বিভিন্ন গ্রামের আশপাশে এসে বালু উত্তোলন করছে তারা। রায়পুরার সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর এপিএস আসাদুজ্জামান বাবু এসব ড্রেজারের মালিক বলে জানা যায়। নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য স্থানে বালু উত্তোলনে বাধা দিতে গেলে বাবুর সন্ত্রাসী বাহিনী অস্ত্র দেখিয়ে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এ ছাড়া প্রভাবশালী কাইয়ূম, সামসু মেম্বারসহ আরো অনেক প্রভাবশালী রয়েছে এসব অবৈধ বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত। দুই জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় ইতঃপূর্বে নরসিংদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রসাসকের দারস্থ হওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ দায়ের ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করলেও কোনো সামধান পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন জানিয়েছেন, সরকারি বিধি মেনে বালু মহাল ইজারা দিয়ে থাকে প্রশাসন। আর ইজারা প্রদান কিংবা বাতিলের সর্বময় ক্ষমতা রাখে জেলা প্রশাসন। যদি বালু মহালের কারণে নদীভাঙনের সৃষ্টি হয় সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনে বালুমহাল বন্ধ করে দেয়া হবে। ইতোমধ্যেই পূর্ব হোসেন নগর বালু মহালটির ইজারা বাতিলসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও জেলাব্যাপী অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী সব মহালের বিষয়ে জেলা প্রশাসন তৎপর রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement