মাল্টা চাষে জাকিরের ভাগ্য বদল
- মামুন হোসেন ভাণ্ডারিয়া (পিরোজপুর)
- ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০
মাল্টা চাষে নতুন দ্বার উন্মোচন করেছেন পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার কৃষক জাকির হোসেন। তার দেখাদেখি এলাকার অন্যান্য শিক্ষিত বেকার যুবকরা মাল্টা চাষে আত্মকর্মসংস্থানের পথ খুঁজছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় মাল্টা চাষ করে জাকির সফলতার মুখ দেখলে ইকড়ী ইউনিয়নের আতরখালী এলাকা এখন পরিচিত মাল্টা গ্রাম নামে পরিচিতি পেয়েছে।
মাল্টা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে মাল্টা। সারিবদ্ধ মাল্টা গাছ ফলের ভারে নুয়ে পড়েছে। গাঢ় সবুজ রঙের মাল্টাগুলোর কোনো কোনোটিতে হলুদাভ ভাব এসেছে। মিষ্টি স্বাদে রসালো মাল্টার প্রতিটি ডালে ঝুলছে মাল্টা।
জাকির জানান, খুলনা ও ঢাকা থেকে পাইকার এসে মাল্টা নিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি খামারে কলা, আদা, হলুদ, করলা, ঢেঁড়সসহ বিভিন্ন সবজির চাষ করেছেন।
জানা যায়, ২০১৭ সালে পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার ইকড়ী ইউনিয়নের আতরখালী গ্রামের মৃত আবদুল জব্বার হাওলাদারের ছেলে জাকির হোসেন ১০ একর জমিতে ৩ শতাধিক বারি-১ জাতের মাল্টা গাছ রোপণ করেন। বর্তমানে তার খামারের ৭ শতাধিক মাল্টা গাছ রয়েছে। পাশাপাশি আদা, হলুদ, পুঁইশাক, করলা, ঢেঁড়সসহ বিভিন্ন সবজিরও চাষ করেছেন জাকির হোসেন।
তিনি জানান, বেকার অবস্থায় বিদেশ যাওয়ার জন্য মনস্থির করেছিলাম। কিন্তু ভাগ্য সহায় না হওয়ায় আর বিদেশ হয়নি। প্রথমে কলা চাষ শুরু করি কিন্তু বন্যার কারণে লোকসান গুনতে হয়। পরে স্থানীয় এক শিক্ষক ও স্থানীয় কৃষি অফিসের সহায়তায় মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হই। প্রথম বছরে এরই মধ্যে ১০০ মণ মাল্টা ঢাকায় পাইকারি বাজার বাদামতলী আড়তদার ইদ্রিস মিয়ার কাছে বিক্রি করি। বাগানের মাল্টা স্বাদে খুব মিষ্টি ও আকারে বড় হওয়ার কারণে আবারো তিনি ঢাকা থেকে এসেছেন বাগানের সব মাল্টার অগ্রিম বায়না করতে।
জাকির হোসেন আরো জানান, এই বাগান তৈরিতে এ পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রথমবার বিক্রি হয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার মাল্টা। আরো ৪০০ মণ মাল্টা বিক্রি করা যাবে বলে তিনি আশা করছেন; যার বাজার মূল্য ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা বলে তিনি ধারণা করছেন।
স্থানীয় শিক্ষক আবদুল মজিদ ও শহিদুল ইসলাম জানান, তার দেখাদেখি চাচাতো ভাই আবু হোসেন দুই একর জমিতে মাল্টা বাগান করেছেন।
আশা করা যাচ্ছে আগামী দু-এক বছরের মধ্যে পুরো গ্রাম মাল্টা গ্রামে পরিণত হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল আলম নবীন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ-আল-মামুন আধুনিক মাল্টা চাষে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা