২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

চিতলমারীতে প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে স্কুলের জমি দখলের অভিযোগ

-

বাগেরহাটের চিতলমারীতে প্রভাবশালী ডা: জওহর লাল সিংহের বিরুদ্ধে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের পক্ষ হতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ইউএনও বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তাকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে শিক্ষা কর্মকর্তার ভূমিকা রহস্যজনক বলে অভিযোগ করেছে অভিভাবকরা। অভিযুক্ত ডা: জওহর লাল সিংহের কাছে স্কুলের জমি দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলের জায়গা দখলের অভিযোগ ভিত্তিহীন ও তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, করোনায় বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সুযোগে চিতলমারী উপজেলার ৯৬নং চরবানিয়ারী পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের পেছনের প্রায় আড়াই শতক জায়গা ডা: জওহর লাল সিংহ নামে এক ব্যক্তি নেট ও তারকাঁটা দিয়ে ঘেরাও করে দখলে নিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, গত ১০ আগস্ট তিনি নিজে হঠাৎ করে গ্রামে উপস্থিত হয়ে এ সরকারি জায়গা দখল করেছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাধা দিলেও তাতে কোনো সাড়া না দিয়ে জায়গা দখলের কাজ চালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে তারা। বিষয়টি পরে গত ১২ আগস্ট চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে জানান বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি গোপাল কৃষ্ণ সিংহ ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অঞ্জলী রাণী সিংহ। গোপাল কৃষ্ণ সিংহ ও প্রধান শিক্ষক অঞ্জলী রাণী সিংহ জানান, ১৯৮৫ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপনকালে মৃত গৌর চন্দ্র সিংহ এবং মৃত দয়াল চন্দ্র সিংহ যৌথভাবে ৩৩ শতক জায়গা দান করে। সে জায়গা হতে হঠাৎ করে ডা: জওহর লাল সিংহ প্রায় আড়াই শতক জায়গা জোর করে দখল নেয়। সরকারি বিদ্যালয়ের সম্পত্তি দখলমুক্ত করতে এবং দখলদারের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে ইউএনওর কাছে তারা লিখিত অভিযোগ করেছে। এ ছাড়া বিষয়টি জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে বলে তারা জানিয়েছেন। ডা: জওহর লাল সিংহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের স্পেশাল গ্যাস্ট্রোন্টোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক (সার্জারি) বলেও জানা গেছে। চিতলমারী উপজেলা শিক্ষাকর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, তিনি দখলের কথা শুনেছেন। কিন্তু কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। পরে আবার মোবাইলে জানান, বিষয়টি নিয়ে আগামী রোববার বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা হবে। তারপর বিস্তারিত তিনি জানাতে পারবেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, লিখিত অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের কোনো তথ্য না জানানোর জন্য শিক্ষাকর্মকর্তা বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে বলেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিদ্যালয় ভবনের পেছনের অংশ নীল রঙের নেট ও তারকাঁটার বেড়া দিয়ে ঘেরা। ঘেরার ভেতরের অংশে স্কুলের সীমানা পিলার। পিলার পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সম্পত্তি বলে দাবি করেন এসএমসি সভাপতি গোপাল কৃষ্ণ সিংহ। ডা: জওহর লাল সিংহের ছোট ভাই সাবেক ইউপি সদস্য হিরন্ময় জবরদখলের কথা অস্বীকার করে জানান, তারা নিজের সম্পত্তি ঘিরেছেন। বিদ্যালয়ের বা সরকারি কোনো সম্পত্তি জওহর লাল জবরদখল করেননি। চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফুল আলম বিদ্যালয়ের জমি দখলের অভিযোগের কথা স্বীকার করে জানান, শিক্ষাকর্মকর্তাকে বিষয়টির আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement